সামরিক আগ্রাসন এখন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েছের কাছে পৌঁছে গেছে। সেখানে তীব্র লড়াই চলছে রুশ বাহিনী ও ইউক্রেনের মধ্যে। রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ হামলা প্রতিরোধ করার জন্য জীবনমরণ লড়াই করছেন ইউক্রেনের সেনারা। ইউক্রেন দাবি করেছে এই লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। রাজধানীর খুব কাছে তুমুল লড়াই চলছে। লড়াই যেহেতু রাজধানীর কাছাকাছি চলছে, তাই এক্ষেত্রে রাশিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে। রাশিয়া কি আসলেই পুরো ইউক্রেন দখল করে নিতে চায়?
অনলাইন বিবিসি বলছে, কিয়েভ শহরের বাইরে একটি বিমানঘাঁটিতে লড়াই চলছে।
যদি রাশিয়ার সেনারা তা দখল করে নিতে পারে তাহলে কিয়েভ দখল করা তাদের জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার ভোরে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। প্রথমে পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ করে। কিন্তু সেই লড়াই এখন বিভিন্ন ফ্রন্টে হচ্ছে। বিস্তারিত আসছে।যদি রাশিয়ার সেনারা তা দখল করে নিতে পারে তাহলে কিয়েভ দখল করা তাদের জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার ভোরে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। প্রথমে পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ করে। কিন্তু সেই লড়াই এখন বিভিন্ন ফ্রন্টে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার মস্কোর সময় সকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে টেলিভিশনে নাটকীয়ভাবে যুদ্ধের ঘোষণা দেন পৃুুুতিন। তিনি হুমকি দেন অন্য দেশগুলোকে। বলেন, যদি তার এই যুদ্ধে অন্য কোন দেশ হস্তক্ষেপ করতে আসে তাহলে তাদেরকে এমন করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে, যা ইতিপূর্বে দেখা যায়নি। এদিন পরের দিকে বলা হয় স্থল, আকাশ এবং নৌপথে সামরিক আগ্রাসন শুরু করেছে রাশিয়া। বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে দেশটির বিভিন্ন শহরে এবং সামরিক স্থাপনায়। এরপর রাশিয়ার সঙ্গে বিস্তৃত সীমান্ত দিয়ে আক্রমণ চলতে থাকে। এর আগে ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদিমির পুতিন। তা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কড়া সতর্কতা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হামলা হলে রাশিয়াকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
দৃশ্যত, এখন পর্যন্ত হামলার জবাব হামলার মাধ্যমে দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে না কোনো দেশ। সব দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ যাবতকালের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পথেই হাঁটছে। শুধু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি লড়াই চালিযে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। তিনি সাধারণ মানুষকে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার আহŸান জানিয়েছেন। বলেছেন, অস্ত্র চাইলেই হাতে তুলে দেয়া হবে। এই অস্ত্র নিয়ে দেশরক্ষায় নামতে হবে। একই অবস্থান তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীরও। কিন্তু রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার আগ্রাসন বৃদ্ধির আতঙ্ক বাড়তে থাকে। সারাদিনই শহরের এখানে ওখানে বন্দুকযুদ্ধ এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, স্যাবোটাজকারীরা শহরে প্রবেশ করেছে। তারাই এর হোতা। ইউক্রেনের বিরদ্ধে রাশিয়া যে, সর্বাত্মক হামলা চালাবে এ সতর্কতা পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগেই জানিয়েছিল।
লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে সাবেক পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র চেরনোবিলের চারপাশে। এই চেরনোবিলেই পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র বিস্ফোরিত হয়েছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্সিয়াল উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, তীব্র লড়াইয়ের পর ওই এলাকায় তারা পরাজিত হয়েছেন।
বৃটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনের সেনারা কড়া প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এতে উভয় পক্ষে অনেক হতাহত হয়েছেন। বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বৃহস্পতিকার আকস্মিকভাবে বেড়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ এরই মধ্যে প্রতিবেশী মলদোভা, রোমানিয়া, পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরিতে চলে গেছেন। এমন মানুষের সংখ্য কমপক্ষে এক লাখ বলে মনে করছে জাতিসংঘ। সভেতলানা নামে একজন নারী বলেছেন, কি করবো কিছুই জানি না আমরা। বর্তমানে আমরা এমন একটি স্থান খুঁজছি, যেখানে নিরাপদ থাকবো। নিরাপদে বসবাস করতে পারবো। এর আগেই মানবাধিকার বিষয়ক গ্রæপগুলো সতর্কতা দিয়েছিল যে, সামরিক আগ্রাসন চালানো হলে ইউরোপে শরণার্থীর ঢল নামবে।