খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান স্কুলের কনফারেন্স রুমে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এর সভাপতিত্বে সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপাচার্য তাঁর যোগদানের পর শিক্ষা, গবেষণা এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে গৃহীত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
সভায় উপাচার্য বলেন, সিনেট বডিকে কার্যকর করতে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচনসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। স্থবির হয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩৫ কোটি টাকার সংশোধিত প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্পভূক্ত সকল অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ জোরদার হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীন ১০ তলা জয়বাংলা একাডেমিক ভবন, ১১ তলা শহিদ বুদ্ধিজীবী ড. মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী ভবন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আইইআর ভবন, টিএসসি, সুলতানা কামাল জিমনেসিয়ামের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চলমান সকল অবকাঠামোর কাজ দৃশ্যমান পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যুগোপযোগী শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নয়ন নীতিমালা সম্প্রতি সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে। মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ইউনিফাইড অর্ডিনেন্স অনুমোদিত হয়েছে। আন্ডার গ্রাজুয়েট পর্যায়ের অর্ডিনেন্স বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেম ওয়ার্ক (বিএনকিউএফ) ও বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (বিএসি) এর গাইড লাইন অনুসরণ করে বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের অনলাইন এবং অফলাইনে ক্লাস পরীক্ষা গ্রহণের বিষয় অর্ডিনেন্স সংশোধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ গবেষণার জমি সংগ্রহে ইতোমধ্যে বটিয়াঘাটার দু’টি স্থান পরিদর্শন করে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি তথা নবীন-প্রবীণ গবেষকদের গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে গবেষণার অনুদান বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা অনুদান প্রবর্তন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ইন্টারন্যাশনাল হাইফেক্টর জার্নালে গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশনায় রেজিস্ট্রেশন ফিস প্রদানের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সক্রিয় বিবেচনাধীন। কোভিডকালিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণা সেলে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা এবং মেডিকেল সেন্টারে টিকাদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ক্যাম্পস সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ চলছে এবং ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য একটি প্রকল্পের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দ বলেন, যোগদানের পর উপাচার্য গৃহীত পদক্ষেপের ফলে স্থবির অবস্থা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় গতিশীল হয়েছে। শিক্ষা-গবেষণায় উপাচার্যের সবিশেষ উদ্যোগের প্রশংসা করেন সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দ। সভায় সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণার অনুদান প্রদান করা যায় কি না সে বিষয়ে প্রস্তাব করেন।
উপাচার্য পরবর্তী পর্যায়ে বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় রূপে গড়ে তুলতে সিনিয়র অধ্যাপকদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও সহায়তা প্রত্যাশা করেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।