সবার দৃষ্টি এখন বঙ্গভবনে। সার্চ কমিটি আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে ১০ জনের নামের তালিকা জমা দেবে। রাষ্ট্রপতি এ তালিকা থেকে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার জন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ দেবেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদিন জানান, একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে সহায়তা করতে সংক্ষিপ্ত তালিকা করার দায়িতপ্রাপ্ত সার্চ কমিটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের বাছাইকৃত তালিকা হস্তান্তর করবে।
জয়নাল আবেদিন আরও জানান, রাষ্ট্রপতি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’-এর আলোকে তালিকা থেকে সিইসি এবং চার জন ইসির নাম চূড়ান্ত করবেন।
বঙ্গভবনের এই মুখপাত্র আরও জানান, খুব শিগগির নতুন নির্বাচন কমিশনের নামগুলো ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এর আগে সার্চ কমিটির সচিবের দায়িত্ব পালনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কমিটি সম্ভাব্য ১০ জন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করেছে। তালিকায় সিইসি পদের জন্য দুজন এবং চারটি ইসি পদের জন্য আট জনের নাম রয়েছে। সার্চ কমিটি প্রস্তাবিত নাম থেকে ১০ জনের নামের তালিকা তৈরি করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ইসি সার্চ কমিটির অপর সদস্যেরা হলেন—হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাবনিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
দায়িত্ব পালনকালে কমিটি নিজেরা সাতটি সভা করেন এবং ইসি গঠনে পরামর্শ পেতে ৪৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৪ ফেব্রুয়ারি ৩২২ জনের নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, পেশাজীবী সংগঠন এবং ব্যক্তি পর্যায়ের নামও রয়েছে।
তালিকা যাচাই-বাছাই করে কয়েক জনের নাম একাধিকবার পাওয়া যায়। সংশোধনের পর তালিকায় ৩১৫ জনের নাম ছিল। পরে তালিকায় নাম কমিয়ে ৫০ জন, পরে ২০ জন এবং সবশেষে ১০ জনের নাম রাখা হয়।
বিএনপি ও সিপিবিসহ কয়েকটি দল অনুসন্ধান কমিটিতে নামের কোনো তালিকা জমা দেয়নি।
ইসি গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি শুরুতেই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন, যেখানে বিএনপি এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ সংলাপে অংশ নেয়নি।
এদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল এবং জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টি (জাপা) এ আলোচনায় অংশ গ্রহণ করে। তারা আগামী দিনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য ইসি নিশ্চিত করতে নতুন আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করে।
গত ২৭ জানুয়ারি তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে জাতীয় সংসদে ইসি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আইন পাস হয়।
পরে রাষ্ট্রপতি গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ আইনের অধীনে ছয় সদস্যবিশিষ্ট ইসি সার্চ কমিটি গঠন করেন।