৬ দলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ফরচুন বরিশালের সঙ্গে আগেই প্লে-অফ পর্ব নিশ্চিত করেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৮ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে ছিল টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে তারা। আজ (শুক্রবার) খুলনা টাইগার্সকে ৬৫ রানে হারিয়ে রান রেটে এগিয়ে থেকে বরিশালের সমান ১১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেছে কুমিল্লা। একই সঙ্গে নিশ্চিত করেছে কোয়ালিফায়ার পর্ব। কুমিল্লার বিরুদ্ধে এ ম্যাচ হেরে প্লে-অফ কঠিন হয়ে গেল খুলনার জন্য। মঈন আলী ছক্কা বৃষ্টিতে ব্যাট হাতে ৩৫ বলে ৭৫ রানের পর বোলিংয়ে নেন ২ উইকেট।
দুই দলের লড়াইয়ে আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৮৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। লক্ষ্য টপকাতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি খুলনা। মাত্র ১২৩ রানে গুটিয়ে গেছে তারা। এতে ৬৫ রানে ম্যাচ হারতে হয় তাদের। এই হারের ফলে প্লে-অফ কঠিন হয়ে গেল খুলনার। ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে। শনিবার ফিরতি লেগে আবার কুমিল্লার মুখোমুখি হবে খুলনা। এ ম্যাচ তারা যদি হারে এবং সিলেটের বিপক্ষে চট্টগ্রাম যদি জয় পায়, তবে লিগ পর্বেই বিদায় বলতে হবে খুলনাকে।
কুমিল্লার দেওয়া ১৮৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রতিপক্ষ বোলারদের বোলিং তোপে শুরুতেই খেই হারায় খুলনার ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নিজের প্রথম ওভার হাত ঘোরাতে এসে খুলনার দুই ওপেনারকে তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। রনি তালুকদার ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই, ৭ বলে ১৬ রানে সাজঘরে আন্দ্রে ফ্লেচার। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও অবশ্য পারেননি মুস্তাফিজ।
রানের দেখা পাননি অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। আবু হায়দার রনি শিকার হন তিনি। তার আগে মঈনের বলে ফাফ ডু প্লেসিকে ক্যাচ দেন ইয়াসির আলি। ১৯ বলে করেন ১৮ রান। আগের ম্যাচে অর্ধশতক হাঁকানো সিকান্দার রাজা ব্যর্থ আজ। ৮ বলে ৮ রান করে রনির দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। তিনে নামা সৌম্যকে ফেরান মঈন। ৩ চারে ২৫ বলে ২২ রান আউট হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সুবিধা করতে পারেননি শেখ মেহেদী হাসান (১১), রুয়েল মিয়া (০)।
৮৮ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারানো খুলনার পরজয় তখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। পরব আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলে থাকা পেরেরা ২৩ বলে ২৬ করে রনির তৃতীয় শিকার হলে খালেদ ফেরেব ৮ রানে। এতে ইনিংসের শেষ ওভারে খুলনা গুটিয়ে যায় ১২৩ রানে। ফলে ৬৫ রানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কুমিল্লা। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আবু হায়দার রনি।
মিরপুরে এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামে কুমিল্লা। দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে লিটন দাস। যদিও অল্পের জন্য পাননি অর্ধশতকের দেখা। মাত্র ১৭ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৪১ রান করেন। তার আগেই অবশ্য সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ১৫ বলে ১১ রান করে স্পিনার নাবিল সামাদের শিলার হন তিনি। এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ৮ বলে ৫ রান করে আউট হলে দলীয় ৭১ রানে ৩ উইকেট হারায় কুমিল্লা।
পরে দলের হাল ধরেন কুমিল্লার দুই বিদেশি রিক্রুট ফাফ ডু প্লেসি ও মঈন আলি। খুলনার বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে শুরুতে খোলসবন্দি এই দুই ব্যাটসম্যান। তবে থিতু হওয়ার পর মঈনের ছক্কাবৃষ্টিতে খুলনার বোলাররা খেই হারান। ৭টি ছক্কায় মঈন অর্ধশতক পূর্ণ করেন মাত্র ২৩ বলে। ফিফটির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন ডু প্লেসিও। তবে যখনই মারমুখী ব্যাট করতে শুরু করেন, তখনই সাজঘরের পথ ধরতে হয় তাকে। ৩৬ বলের মোকাবেলায় প্রোটিয়া সুপারস্টার ৩৮ রান করতে হাঁকান ৩টি চার ও ১টি ছক্কা।
দুজনের ৮৩ রানের পার্টনারশিপ ভাঙলে আরো আগ্রাসী হন মঈন। ১৯তম ওভারের শেষ বলে পেরেরাকে উইকেট দেওয়ার আগে খেলেন ৩৫ বলে ৭৫ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। যেখানে মাত্র ১ চারের সঙ্গে ছক্কা মারেন ৯টি। শেষদিকে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ৬ বলে অপরাজিত ১২ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান জড়ো করে কুমিল্লা। খুলনার পক্ষে থিসারা পেরেরা সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই