সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালী ইউপি’র দুই বারের নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমকে সাদা পোষাকধারী কর্তৃক হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে মারপিট করে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন গ্রেপ্তারকৃত কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমের স্ত্রী রোকসানা পারভীন। তিনি এ সময় তার স্বামীর মুক্তির দাবী জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্বামী শেখ আব্দুর রহিম শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পর পর দুই বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান। ইউনিয়নবাসীর কাছে জনপ্রিয় হওয়ায় আমার স্বামীর প্রতিপক্ষরা তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করার জন্য তার বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশত মিথ্যে মামলা দায়ের করেন এবং খুন জখমসহ একাধিকবার হত্যারও চেষ্টা করেন। যদিও অধিকাংশ মামলা মিথ্যে প্রমানিত হয়েছে। বর্তমানে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা চলমান রয়েছে। এসব মামলাগুলোও মিথ্যে। কারন আমার স্বামী একজন সৎ, নির্ভিক, নির্দলীয় ও সমাজসেবক। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বার বার তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। ভোটের সময় ওই ষড়যন্ত্রকারীদের ভয়ে তিনি পালিয়ে ছিলেন। এমনকি নিজের ভোটটিও দিতে না পারলেও সদ্য সমাপ্ত কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে তিনি জয়লাভ করেন। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে নতুন চক্রান্ত শুরু করেন। তারা মনে করেন আমার স্বামীকে সরাতে পারলে তাদেও আর কোন প্রতিদ্বন্দ্বি থাকবে না। এই চক্রান্তের অংশ হিসেবে গত ৯ ফেব্রুয়ারী বাড়ী থেকে মটরসাইকেল যোগে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার পথে ৫ থেকে ৬ জনের সাদাপোষাকধারী একটি দল তার গতিরোধ করে তাকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকেন। তাদের মারপিটে আমার স্বামী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় পা তুলে দিলে আমার স্বামী গোংরাতে থাকলে এলাকাবাসী তাদের হাত থেকে স্বামীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। সে সময় সাদাপোষাকধারীরা এলাকাবাসীর উপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ী মারপিট করতে থাকেন। এতে কয়েকজন এলাকাবাসী আহত হন। পরে এলাকাবাসী একত্রিত হলে হামলাকারীরা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে হ্যান্ডক্যাপ বের করে স্বামীকে তুলে নিয়ে থানায় সোপর্দ করেন। বাংলাদেশে প্রকাশ্যে একজন জনপ্রিয় চেয়ারম্যানকে এভাবে মারপিট করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন কিনা এমন প্রশ্ন রেখে তিনি হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন। জনগণ প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দায়ের করা হবে এটা ঠিক না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দাম্পত্য জীবনে ছোট ছোট তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের নিয়ে আমি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আমি আশংকা করছি ওই ষড়যন্ত্রকারীরা আমার স্বামীর আরো বড়ধরনের ক্ষতি করতে পারেন। কৈখালী ইউনিয়নবাসীসহ পুরো শ্যামনগর উপজেলাবাসী জানেন আমার স্বামী ষড়যন্ত্রের শিকার। তারপরও যদি তার বিরুদ্ধে কোন মামলায় ওয়ারেন্ট থাকে তাহলে পুলিশ ওয়ারেন্ট পেপার সাথে নিয়ে তাকে আটক করতে পারতেন। অথচ তাকে আটকের নামে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে মারপিট করবেন এটি কিভাবে হতে পারে ? প্রতিবাদ করায় নিরিহ ৩০ জন গ্রামবাসীকে মামলার আসামী হয়েছেন। পাশাপাশি উক্ত মামলায় আমার স্বামীকেই প্রধান আসামী করা হয়েছে।
তিনি এ ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক তার স্বামীসহ নিরিহ গ্রামবাসীকে মিথ্যে মামলার দায় হতে অব্যাহিত প্রদান এবং তার স্বামীর প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএ