ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এমডি মো. রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের কিছু সংখ্যক শেয়ার তার আত্মীয়-স্বজনের নামে হস্তান্তরে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ইভ্যালি পরিচালনা বোর্ডকে এ সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।
রাসেল ও শামীমার আত্মীয়-স্বজনের মৌখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে ইভ্যালির বোর্ডের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোরশেদ আহমেদ খান। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন।
পরে ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন বলেন, ইভ্যালির প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টরের শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাই-বোন, শালা-সুমন্দী আজ আদালতে সশরীরে হাজির হন। তারা আদালতকে জানান, ইভ্যালি পুনর্গঠনের জন্য তারা কাজ করছেন। যারা ইভ্যালির কাছে টাকা-পয়সা ও পণ্য পাবেন সেগুলো ফেরত দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চান তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট একটা ডাইরেকশন দেন, যাতে করে ইভ্যালির প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যানের যে শেয়ারগুলো আছে সেগুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক শেয়ার যেন তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে পারেন।
তিনি বলেন, ইভ্যালির প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যান জেলখানায় অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় পুরো হস্তান্তর প্রক্রিয়া তাদের জেলখানায় থাকা অবস্থাতে হবে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও জেল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে হবে। উনাদের শেয়ারগুলো তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তখন তারা ইভ্যালি পুনর্গঠনের পাশাপাশি পরিচালনা বোর্ডকে সহযোগিতা করবেন।
বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতে কেলেঙ্কারি শুরুর পর তিন মাস ধরে ইভ্যালির কেনা-বেচা এবং পণ্য সরবরাহের কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির আয়ের কোনো সংস্থান নেই। কিন্তু ব্যয় যথারীতি রয়েছে। ইভ্যালির ওয়েবসাইট ও অ্যাপস বন্ধ রয়েছে। ফেসবুক পাতাতেও গত বছরের ১৮ অক্টোবরের পর নতুন কোনো আপডেট আসেনি।
এর আগে, গত ৩১ জানুয়ারি ইভ্যালির ধানমন্ডি অফিসের দুটি লকার ভাঙা হয়। আদালতের নির্দেশনায় গঠিত বোর্ডের পাঁচ সদস্য এসময় উপস্থিত ছিলেন। তারা ভেবেছিলেন লকারে অনেক টাকা থাকবে। কিন্তু লকার ভাঙার পর দেখা যায় একটি লকারে টাকা আছে মাত্র ২৫৩০, অন্য লকারে কোনো টাকা নেই। দুই লকারে পাওয়া গেছে বিভিন্ন ব্যাংকের দেড় শতাধিক চেক বই।
এদিকে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ইভ্যালির ৭টি গাড়ি নিলামে বিক্রির দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও একজন সহকারী রেজিস্ট্রার নিলামের বিষয়টি তত্ত্বাবধান করবেন। আর নিলামের সময় পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন রাখতে পুলিশ কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ইভ্যালির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সারাদেশে একাধিক মামলা রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম