ইউক্রেন ইস্যুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মস্কোতে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বৈঠক শেষে পুতিন ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও অদূর ভবিষ্যতে এই সংকট কেটে যাওয়ার কোনো আশা দেখতে পাচ্ছেন না ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
সোমবার পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টার বৈঠক শেষে মস্কোত এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে বর্তমানে যে সংকট দেখা দিয়েছে, কূটনৈতিক পথে তার সমাধানের পথ খুঁজতেই আমি মস্কোতে এসেছি। সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে এখনও কোনো স্থির সিদ্ধান্ত হয়নি; তবে আমার মনে হচ্ছে, আমাদের সামনে কঠিন দিন অপেক্ষা করছে।’
একসময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও বর্তমানে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী স্বাধীন দেশ ইউক্রেন পশ্চিমা দেশসমূহের সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই দেশটির সঙ্গে উত্তেজনা চলছে রাশিয়ার। সম্প্রতি ইউক্রেন ন্যাটোর ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
গত প্রায় এক মাস ধরে ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে রাশিয়া। ন্যাটোর নেতৃত্বে থাকা দেশ যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে এই ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার বলেছেন, ইউক্রেনে কোনো ধরনের আগ্রাসন চালালে আন্তর্জাতিক বিশ্বে নজিরবিহীন সংকটে পড়বে রাশিয়া ও দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট এর জবাবে পাল্টা অভিযোগ করে বলেছন, রাশিয়াকে চাপে রাখার জন্য ইউক্রেনকে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ঐতিহাসিকভাবে পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্যবিরোধী রাশিয়া সবসময়ই ন্যাটোর প্রতি বৈরী। সাম্প্রতিক এই বৈরীভাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কৃষ্ণসাগর, যা রাশিয়ার একমাত্র বাণিজ্যিক জলপথ। যদি এই সাগরের তীরবর্তী দেশ ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভ করে, সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই কৃষ্ণসাগরে ন্যাটোর তৎপরতা বাড়বে, যা কখনও রাশিয়ার কাম্য নয়।
তবে রাশিয়া ইতোমধ্যে জানিয়েছে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কোনো ইচ্ছা দেশটির নেই। সোমবারের বৈঠক শেষে মস্কোতে উপস্থিত ফরাসি সাংবাদকিদের প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বলেন, ‘আপনারা কি রাশিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের যুদ্ধ চান? যদি এই আপনাদের চাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে বলছি— যদি সত্যিই যুদ্ধ বাঁধে, তাহলে কেউই জিতবে না।’
খুলনা গেজেট/ এস আই