সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালী এলাকার প্রায় ৩শ’ মালিকের রেকর্ডীয় ৪৩৯.২০ একর (১৩২০ বিঘা) জমি বিগত ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে জবরদখলে রেখেছে ভূমিহীনরা। ভূমিহীন নামধারী ওই সব অবৈধ দখলদারদেরকে খলিশাখালী এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার ও মাইকিং করে ৭ দিনের সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে সেই সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবৈধ দখলদাররা খলিশাখালীর জমি ছেড়ে না দেয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে উচ্ছেদাভিযান পরিচালনার জন্য পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের অনুমতি চেয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে খলিশাখালীর ইছাদ আলীর ছেলে আনারুল ও শাহজাহান গাজীর ছেলে রবিউলের নের্তৃত্বে বিস্তৃর্ণ ওই জমি ও মৎস্য ঘেরগুলো দখল করে নেয় ভূমিহীনরা। গেল ৪ মাসে খলিশাখালীর জবরদখলকৃত বিস্তীর্ন ওই জমি এবং সেখানকার শতশত বিঘার মৎস্য ঘের থেকে লুন্ঠিত মাছসহ অন্যান্য সম্পদ বেঁচাকেনা এবং হাতবদল করে সেখানকার ভূমিদস্যুরা। জবরদখলের ও লুটপাটের প্রায় ৪ মাস পর এসব ভূমিদস্যূদের উচ্ছেদে নড়েচড়ে বসেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
সম্প্রতি জেলা ভূ-সম্পত্তি জবরদখল ও পুনরূদ্ধার সংক্রান্ত নভেম্বর-২১ মাসের সভার সিদ্ধান্তক্রমে ভূমিদস্যুদের খলিশাখালীর জমি ছেড়ে দিতে ৭ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার ও মাইকিং করে দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন। এরপর থেকে খলিশাখালীর জবরদখল বজায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সেখানকার ভূমিদস্যুরা। তারা নানাভাবে আন্দোলন সংগ্রামের ঘোষণা দিয়ে খলিশাখালীতে তাদের অবস্থান ধরে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করতে থাকে। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) খলিশাখালীতে অবস্থানরত ভূমিহীন নারী-পুরুষেরা মাথায় কাফনের কাপড় বেধে উচ্ছেদের প্রতিবাদে সমাবেশ করে। এসময় তারা ভূমিহীনদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১৯টি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। একই সাথে আইনের বাইরে যেয়ে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করার যে কোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার হুমকি দিয়ে করোনা পরিস্থিতির পরিবর্তণ হলে সচেতন নাগরিকদের নিয়ে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা দেয়।
এদিকে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ভূমিদস্যুদের জমি ছেড়ে দিতে উপজেলা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া ৭ দিনের সময়সীমা। নির্ধারিত এ সময়ের মধ্যে অবৈধ দখলদাররা খলিশাখালীর জমি ছেড়ে না দেয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে উচ্ছেদাভিযান পরিচালনার জন্য পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের অনুমতি চেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। জেলা প্রশাসকের অনুমতি এবং পুলিশ মোতায়েন হলে খলিশাখালীতে উচ্ছেদাভিযান পরিচালনা করে ভূমিদস্যুদের উৎখাত করা হবে বলে জানান নির্বাহী অফিসার খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।
নির্বাহী অফিসারের চিঠির প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির বলেন, উচ্ছেদাভিযানের জন্য পুলিশ মোতায়েনের ব্যাপারে শীঘ্রই সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম