প্রত্যেক বছর বোরো ধান রোপণের সময় প্রাকৃতিক খাদ্যের যোগান কম থাকে। তাই বাড়ি থেকে দূরে পদ্মার চরে নিয়ে গরু রাখেন সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের খামারিরা। প্রতিবছরের ন্যায় শিবগঞ্জ উপজেলার চরবেষ্টিত পদ্মাপাড়ের পাঁকা ইউনিয়নের খামারিরা অস্থায়ী তাবু টানিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন বিভিন্ন চরে। গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হওয়া হঠাৎ বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাদের।
বৃষ্টিতে ভেজার পর তীব্র ঠান্ডায় অন্তত ২০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ বৃষ্টির পর খোলা আকাশের নিচে ঠান্ডা বাতাসে গরুগুলোর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রণজিৎ চন্দ্রও। অসুস্থ অবস্থায় থাকা আরও গরুর মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
গত শুক্রবার থেকে রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত তিন দিনে কমপক্ষে ২০টি গরু মারা গেছে। তবে খামারিরা বাকি গরুগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় গরু খামারি শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ৯টিসহ স্থানীয় গরুর মালিক লিটন, সাহেব, লাট্টু, ডাক্কু, বিশু, সেরাজুল, মামুন ও এরফানের শতাধিক গরু চরে খোলা অবস্থায় রাখা ছিল। শুক্রবার গভীর রাত থেকে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। গরুগুলো মারা যাওয়ার কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হবে। মৃত গরুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে দাবি করেছেন তিনি।
পাঁকা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের নেফাউর রহমান জানান, তার ১৩টি গরু মারা গেছে। কিন্তু প্রশাসনের কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি। রোববার প্রাণিসম্পদ বিভাগের একজন চিকিৎসক এসে খোঁজ খবর নিয়ে চলে যান। তিনি চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন।
একটি চরে আব্দুল সালামের ২৬টি গরু ছিল। তিনি জানান, বছরের এ সময়ে চরে প্রচুর ঘাস থাকে। তাই খামারিরা চরে গুরু নিয়ে যান। কিন্তু এবার শীতের সময় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। তারপর আবার কনকনে বাতাস ছিল।
বৃষ্টি আর কনকনে বাতাসে গরুগুলো খোলা আকাশের নিচেই ছিল। তাই ঠান্ডায় কয়েকটি গরু মারা গেছে। বাকিগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রণজিৎ চন্দ্র বলেন, বৃষ্টির সময় খোলা আকাশের নিচে ছিল গরুগুলো। তাই প্রচণ্ড শীতে অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রায় ২০টি গরু মারা যায়। বাকিগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে গরু মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত গরু মালিকদের তালিকা করা হচ্ছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।