চট্টগ্রামে ২০ বছর ধরে ছদ্মাবেশে ছিলেন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জসিম উদ্দিন। পরিবর্তন করে ফেলেন নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র। বেছে নেন ট্রাকচালকের পেশা। আসল পরিচয় গোপন রেখে বিয়েও করেন। কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি। তাকে ধরা পড়তে হয়েছে র্যাবের হাতে।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার নিমতল এলাকা থেকে র্যাব-৭ এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার জসিম উদ্দিন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার।
র্যাব সূত্র জানায়, ২০০২ সালে সংঘটিত লোহাগাড়ার ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলার আসামি ছিলেন জসিম উদ্দিন। মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই এলাকা ছাড়েন তিনি। ছদ্মবেশে পালিয়ে বেড়াতে থাকেন বিভিন্ন স্থানে। ডবলমুড়িং থানাধীন ফকিরহাট এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এ সময় ট্রাকের চালক হিসেবে পরিচয় দিতেন নিজেকে। এরপর কালুরঘাট এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বোয়ালখালীতে বিয়ে করেন এবং লোহাগাড়ায় নিজের পৈত্রিক ভিটা-বাড়ি ফেলে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন।
এরপর কালুরঘাট এলাকায় গাড়িচালক পেশায় তিন বছরের মতো অবস্থান করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ ডেবারপাড় বাসা নিয়ে গাড়িচালক পেশায় চার বছর বসবাস করেন। এরপর আবার ফকির হাটে বাসা ভাড়া নিয়ে ৭ বছর গাড়িচালক পেশায় অবস্থান করেন। সেখান থেকে বাসা পরিবর্তন করে বন্দর থানাধীন নিমতলায় বাসা ভাড়া নেন। মূলত ২০ বছর ধরে তিনি ট্রাকচালকের পেশায় থেকে নিজেকে আত্মগোপন করে রেখেছিলেন। ট্রাকচালকের লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরিতে তিনি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করেন এবং নিজের আত্মীয়স্বজন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন।
র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করে। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসিম স্বীকার করেছেন- তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলায় পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার জানান, ছদ্মাবেশে ২০ বছর ধরে পলাতক থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে লোহাগাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।