ফুটন্ত তেলের কড়াইয়ে হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করে ডালপুরি ভেজে তাক লাগিয়ে কৌতূহলী মানুষের মুখে মুখে এখন আলোচিত কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি বাজারের লিয়াকত আলীর নাম।
মুখরোচক ডালপুরি বিক্রি করে জীবন-সংসারকেও মনের মতো করে সাজিয়েছেন তিনি। এমন সাফল্যের কারণে এলাকায় তিনি ডালপুরি লিয়াকত হিসেবেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান লিয়াকত আলী। ৪০ বছর আগে অভাবের সংসারে হাল ধরতে বেছে নিয়েছিলেন বাড়ির পাশের বাজারে ডালপুরি বিক্রির ব্যবসা। তারাকান্দি মধ্য বাজারের সরকারি জমিতে তৈরি এক চালা ঘরে ব্যবসা তার। মুখরোচক ডালপুরি তৈরিতে তার হাতের যশ অন্য পাঁচজন ব্যবসায়ী থেকে তাকে বরাবরই আলাদা করে রেখেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারাকান্দি বাজারে লিয়াকত আলী মিয়ার ডালপুরি দোকান সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, ডালপুরি নিতে এবং উত্তপ্ত কড়াইয়ের তেলে হাতড়ানোর দৃশ্য দেখতে আসা বিভিন্ন এলাকার নানা বয়সের নারী-পুরুষের ভিড়।
এ সময় পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর থেকে শিক্ষক ও বন্ধুকে নিয়ে আসা কলেজছাত্র মাহমুদুল হক রিয়াদের সঙ্গে কথা হয়। সে জানায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল লিয়াকত আলী মিয়ার ডালপুরি ভাজার কারিশমা দেখতে তার এক শিক্ষক ও বন্ধুকে নিয়ে এখানে এসেছে।
ডালপুরি ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, অভাবের সংসারে হাল ধরতে ৪০ বছর আগে এ ব্যবসাকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে এ ব্যবসাই হয়ে ওঠে তার ধ্যান-জ্ঞান। ডালপুরি ভাজার কাজে ঝাঁঝর ব্যবহারের পাশাপাশি তিনি কড়াইয়ের উত্তপ্ত তেল নাড়াচাড়া করে ডালপুরি ভাজতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। এ কারণে ম্যাজিকের মতো উত্তপ্ত তেলের কড়াইয়ে হাতড়ানোর ঘটনাও বাড়তি দৃষ্টি কাড়ে বিভিন্ন বয়সের ভোজন রসিক কৌতূহলী মানুষের।
এভাবেই ডালপুরি বিক্রির ব্যবসা করে তিনি সহায়-সম্পদ গড়ে তোলার পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছেন। কিন্তু সংসারে আশাতীত সচ্ছলতা ফিরলেও জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়েও জীবনের গল্পকে পাল্টে দেয়ার ব্যবসাকেই আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তিনি। এলাকাবাসীর কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছেন ডালপুরি লিয়াকত হিসেবে।