চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ৩৪ লাখ ১৭ হাজারে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি, আর্জেন্টিনা ও পোল্যান্ড। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৬ কোটি ৬৪ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ হাজার ৯২৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় তিনশো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার ৮১২ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ লাখ ১৭ হাজার ৩৬৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৮০ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ কোটি ৬৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৯২ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৯১ হাজার ৯৬০ জন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ৫৭৭ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৪৬ লাখ ৫৯ হাজার ৯৪২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ২ হাজার ২৮ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৬৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৮১৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ১৪ লাখ ৪ হাজার ৬১৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার ৭৭০ জনের।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৯২ হাজার ১৬৮ জন এবং মারা গেছেন ২৬৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৮১ লাখ ২২ হাজার ৭২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩০ হাজার ১৫ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৮৮৮ জন এবং মারা গেছেন ১৭৬ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৯৭ জন এবং মারা গেছেন ৩৮৯ জন।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৮৭১ জন এবং মারা গেছেন ৩৩৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪০ জন মারা গেছেন। একই সময়ে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৬৬৩ জন এবং মারা গেছেন ২৭৩ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬৩ জন এবং মারা গেছেন ১৮২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৬৫ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৩৯৩ জন এবং মারা গেছেন ১৫৪ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৬২ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৯৭২ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৪৭ লাখ ৮২ হাজার ৯২২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২৫ হাজার ১৬৯ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার ১৯৭ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৯২ হাজার ৩৫৬ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৭৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৬০ জন, পোল্যান্ডে ২৬২ জন, কানাডায় ১৮১ জন, আর্জেন্টিনায় ৩৩৩ জন, গ্রিসে ১১৩ জন, হাঙ্গেরিতে ৬৪ জন এবং ভিয়েতনামে ১২৬ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৫৩২ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৩০৮ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।