উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশনে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহিন শাহিরিয়ার রাতুল। অনশনের দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয় থেমে থেমে ব্যথা। তবুও ভাঙেননি অনশন। অবশেষে ধরা পড়ে অ্যাপেন্ডিসাইটিস। হয় অস্ত্রোপচার। তবুও চলছে তার অনশন।
রোববার বিকালে অ্যাপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত হলে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে রাগিব রাবেয়া হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার হয়। যার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
রাতুলের সহপাঠী আন্দোলনকারী ছাত্র মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সে (রাতুল) অনশনরত অবস্থায় দ্বিতীয় দিন তার হঠাৎ ব্যথা শুরু হয়। প্রথমে স্বাভাবিক ব্যথা মনে হলে ইঞ্জেকশন দিলে ভালো হয়। পরের দিন ব্যথা উঠলেও ভালো হয়। তৃতীয় দিন কোনোভাবেই ব্যথা না থামলে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। আজ (রোববার) তার অ্যাপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত হলে অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে অস্ত্রোপচার শেষেও সে অনশনে আছে।
রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. নুরুল কাইয়ুম মোহাম্মদ মোরসালিন বলেন, রাতুল যখন হাসপাতালে আসেন, আমাদের মনে হয়েছে অ্যাপেন্ডিসাইটিস। তার পেটের ডান দিকে ব্যথা ছিল, জ্বর ছিল। বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমরা নিশ্চিত হলাম এটা অ্যাপেন্ডিসাইটিস। অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লাস্ট স্টেজ ছিল। অপারেশন না করালে ব্লাস্ট হয়ে যেত। ব্লাস্ট হওয়ার আগ মুহূর্তে আমরা কেটে বের করেছি। এখন তাকে স্টেপ ডাউন ইউনিটে (এসডিইউ) রাখা হয়েছে। এখন আশঙ্কামুক্ত বলা যায়।
এদিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রোববার দিবাগত রাত ৩টায় শিক্ষার্থীদের অনশন ১০৭ ঘণ্টায় গড়ায়। এখনো অনড় অবস্থাতেই চলছে তাদের অনশন। ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৭ জন। শুরুতে ২৪ জন অনশন শুরু করলেও নতুন করে গণঅনশনে যুক্ত আছেন আরও পাঁচজন।
অপরদিকে রোববার বিকালে উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে মানব দেওয়াল তৈরি করে রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছেন উপাচার্য। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে