খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ড. শেখ আব্দুল রশিদকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে ২ বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৮১
  ছয় মামলায় সাবের হোসেনের জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই
  বাংলাদেশী ৫ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরকান আর্মি

সম্ভাব্য লকডাউনের শঙ্কায় অনেকেই দুশ্চিন্তায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে চোখ রাঙ্গাচ্ছে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন। দেশে বেড়ে চলছে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। সংক্রমণ ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ সহ জারি করা হয়েছে নতুন বিধিনিষেধ। চলমান বিধিনিষেধে কাজ না হলে আবারও লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে, এমন ধারণা অনেকের। লকডাউনের কথা বিবেচনা করে অনেকেই শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ওই মাসের ১৬ তারিখ দেশের সকল বিভাগ ও জেলাগুলোর স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছায়। ঐ বছর ২ জুলাই সর্বোচ্চ ৪০১৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশব্যাপী সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলে ঘোষণা করা হয় লকডাউন। বর্তমানে দেশে ডেল্টা-ওমিক্রনে খুব দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে। চলছে বিধিনিষেধ। তারপরও দৈনিক শনাক্ত ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আবারও ঘোষিত হতে পারে লকডাউন, এমন শঙ্কা রয়েছে।

কথা হয় এলিভেটেড মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা ইয়াসমিন লিপির সাথে। তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চ মাসে খুলনা নগরীতে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনার কারণে দীর্ঘ ১৯ মাস তার স্কুল বন্ধ থাকে। এ সময় বাড়ি ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ তাকে তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে। করোনাকালীন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক শিক্ষক তার পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন। সবেমাত্র বিদ্যালয়গুলো চালু হয়েছিল। আর এরমধ্যে হানা দিয়েছে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন। ইতিমধ্যে দুই সপ্তাহের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা রোগী যেভাবে বাড়ছে তাতে তিনি শঙ্কিত। সংক্রমণ আরও বাড়লে ঘোষিত হতে পারে লকডাউন। এটা ঘোষণা করা হলে এবার রাস্তায় থালা নিয়ে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।

তবে তিনি সতর্কতায় বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন। যে সকল শিক্ষার্থী অসুস্থ তাদের বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পাঠদান দিচ্ছেন তিনি। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মাধ্যমে শিশুদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে।

বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক কর্মকর্তা হারুন উর রাশীদ জানান, সবেমাত্র দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। লকডাউন ঘোষণা করা হলে আবারও সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বন্ধ হতে পারে মানুষের আয়ের পথ। বাড়বে দারিদ্রতার সংখ্যা। মানুষের মাথাপিছু আয় কমে যাবে। বেড়ে যাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম। আয় কমে গেলে অপরাধ প্রবণতার দিকে ধাবিত হবে সমাজের এক শ্রেণির মানুষ। তিনিও শঙ্কায় রয়েছেন। তাই লকডাউন ঘোষণা না করে সংক্রমণের হার রোধ করার উপায় নিয়ে সকলকে ভাবতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

খুলনার ছালেহিয়া প্রকাশনী ও ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস এর স্বত্তাধিকারী মাও. মো: ইছা রুহুল্লাহ জানান, “বিগত দিনের লকডাউনে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে কেবল ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা চলছে। যদি আবারও লকডাউন ঘোষণা করা হয় তাহলে পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।”

নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, খুলনার কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শফিউল্লাহর মাতা জানান, “করোনাকালীন অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। বেসিক কিছু অর্জন করতে পারেনি সে। অনলাইনের ক্লাস শেষ তো সব শেষ। অনলাইনে পাঠদানের মাধ্যমে ছেলে মেয়েরা মূলত: মোবাইলে আসাক্ত হয়েছে বেশী।”

দিনমজুর সিদ্দিক সানা বলেন, সরকার যেন লকডাউনের মতো বিষয়টি আর ঘোষণা না করে। এবার এটা কার্যকর করলে অনেকেই না খেয়ে মারা যাবে বলে তিনি জানান।

খুলনা গে‌জেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!