বাগেরহাটের ফকিরহাটে ট্রাক-মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত একজনকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মাওয়া ফেরিঘাটে মারা গেছে। নিহত ওই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর নাম সাকিব, বাড়ি ফকিরহাটের পিলজং-এ। দুর্ঘটনায় আরও ৩ জন গুরুতর আহত হয়। শনিবার (৮ জানুয়ারি) মধ্যরাতে উপজেলার শ্যামবাগাত মুন স্টার জুট মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে বাগেরহাটে নিজ মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন তারা। পথিমধ্যে তাদের বহনকারী মাহেন্দ্রার সাথে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় মাদ্রাসার ৩ শিক্ষার্থী। আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার রনজিতপুর এলাকার হোসাইনের ছেলে হাফেজ আব্দুল্লাহ, রামপালের ঝনঝনিয়ার বাসিন্দা আব্দুল গফুর ও সাতক্ষীরা জেলার সালাহউদ্দীন।
তারা সবাই বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। এদের মধ্যে আব্দুল্লাহ দাওরায় হাদিস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং অপর দু’জন মাদ্রাসার অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থী।
হাকিমপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল মাবুদ জানান, মাদ্রাসার ছাত্ররা শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় আন্তর্জাতিক কিরাত সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। রাতে খুলনা থেকে সিএনজিযোগে মাদ্রাসার উদ্দেশ্য রওনা দেন। এ সময় শ্যামবাগাত এলাকার মুনস্টার জুট মিলের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ডাম্পার ট্রাকের সঙ্গে মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে তিন জন মারা যান। এ সময় আরও ৪ যাত্রী আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কাটাখালি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী জানান, দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ কাটাখালি হাইওয়ে থানায় এবং আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঘন কুয়াশার কারনে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘাতক ডাম্পার ট্রাকটি পালিয়ে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ট্রাক ও চালককে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
নিহত তিন শিক্ষার্থীর জানাজার নামাজ রবিবার সকাল ১০ টায় হাকিমপুর মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় নামাজ শেষ নিহতদের লাশ তাদের নিজ নিজ এলাকায় নেওয়া হয়েছে। এসময় বাগেরহাট সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মুসব্বিরুল ইসলাম সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনায় চার শিক্ষার্থী নিহত হওয়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
খুলনা গেজেট/এনএম