চাঁদাবাজরা ঠিকাদারের বাড়ী এসেছিল দাবিকৃত অর্থ নিতে। মতনৈক্যে ঠিকাদারের সাথে বাক-বিতান্ডার একপর্যায়ে চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্যে নিজের বৈধ পিস্তল দিয়ে গুলি করেন ঠিকাদার শেখ ইউসুফ আলী। চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্যে করা ঠিকাদারের গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বিদ্ধ হয় স্কুল ছাত্রী লামিয়া। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে খুলনা মহানগরীর মিস্ত্রিপাড়া আরাফাত জামে মসজিদের পাশে এঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত ঠিকাদার ও স্থানীয় একাধিক সুত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে, ব্যবহৃত পিস্তল, ১০ রাউন্ড গুলি ও দু’টি গুলির খোসা জব্দ করেছে পুলিশ। তবে এ প্রতিবেদনটি আপলোড হওয়া (সাড়ে ৭টায়) পর্যন্ত এঘটনায় মামলা হয়নি।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্কুল ছাত্রী লামিয়া নগরীর আরাফাত জামে মসজিদ এলাকার বাসিন্দা মোঃ জামাল হোসেনের মেয়ে। সে নগরীর ইকবালনগর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশের সুত্র ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা ঠিকাদার শেখ ইউসুফ আলী নগরীর বাবু খান রোডের সংস্কারের কাজ করছেন। এই কাজটি নেয়ার জন্য কয়েকজন সন্ত্রাসী বেশ কয়েকদিন ধরে তাকে চাপ দিচ্ছেন। তাদের লোকজন শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ইউসুফ আলীর বাড়িতে গিয়ে কাজ না দিলে মোটা অংকের চাঁদার দাবিতে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ইউসুফ আলী চাঁদাবাজদের লক্ষ্য করে তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে দুই রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন। এর একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বিপরীত দিকের বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে থাকা স্কুল ছাত্রী লামিয়ার বাম পায়ের উপরের অংশে বিদ্ধ হয়। এতে সে অচেতন হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করে।
খুমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ অনিরুদ্ধ সরকার জানান, লামিয়া বর্তমানে খুমেকের সার্জারি ওয়ার্ডের ২নং ইউনিটে ভর্তি চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সে আশঙ্কামুক্ত। তবে, লামিয়ার জীবনের ঝুঁকি না থাকলেও পায়ের বড়ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, লামিয়ার বাম পায়ের ওপরের অংশের (থাই) গুলিটি বিদ্ধ হয়েছে। তবে, এটি হাঁড়ে না লেগে মাংসের মধ্যে ঢুকে আছে। তাকে আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। শনিবার তাকে অর্থপেডিক্স চিকিৎসককে দেখানো হবে। এরপর তার পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঠিকাদার শেখ মোঃ ইউসুফ আলী জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে চারজন অপরিচিত সন্ত্রাসী তার বাসায় গিয়ে অস্ত্রের মুখে ফের চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে তিনি ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করলে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়।
খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, তাৎক্ষনিক আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই। এ ঘটনায় ব্যবহৃত পিস্তল, অব্যবহৃত ১০ রাউন্ড গুলি ও ২ রাউন্ড গুলির খোসা জব্দ করেছি। কাউকে আটক করা হয়নি। এঘটনায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (রাত সাড়ে ৭টা) এঘটনায় মামলা হয়নি।
কেএমপি’র মুখপাত্র উপ-পুলিশ কমিশনার কানাইলাল সরকার বলেন, বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে জানানো হবে।
খুলনা গেজেট/এআইএন