‘লাইচ্ছা থু্ইছি, বাইচ্ছা লন’। ‘যা নিবেন দুইশ’। হাকডাকে ব্যস্ত সময় পার করছেন নগরীর ডাকবংলাসহ আশপাশের এলাকার হকাররা। গত দু’দিনের ঠান্ডায় কদর বেড়েছে শীতের পোশাকের। তাইতো গরম কাপড় কিনতে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ক্রেতাদের পকেট কাটছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
অগ্রহায়ণের শেষ থেকে শীত পড়তে থাকে। ঋতু বৈচিত্রের কারণে শীত এবার পৌষের মাঝামাঝি সময়ে পড়ছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় গত দু’দিন তাপমাত্রা কম। শীত পড়েতে শুরু করেছে। ঠান্ডা থেকে বাঁচার তাগিদে মানুষ ভিড় করছে গরম কাপড়ের দোকানে।
ডাকবাংলা, ফেরীঘাট, খুলনা বিপনী কেন্দ্র, জব্বার মার্কেট, নজরুল ইসলাম হকার্স মার্কেট ও খুলনা জেলা স্টেডিয়ামসহ নগরীর অধিকাংশ ফুটপথগুলো হকারদের দখলে রয়েছে। স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে গরম কাপড়। সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তবে বড় শপিং মলে না গিয়ে মধ্য ও নি¤œ আয়ের মানুষেরা ভিড় করছেন পুরানো কাপড়ের দোকানগুলোতে। দু’বছর আগের তুলনায় এবার দাম বেশী নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা
ডাকবাংলা মোড়ের অস্থায়ী ব্যবসায়ী হাসানত আহমেদ খুলনা গেজেটকে বলেন, গত কয়েকদিন গরম কাপড় বেশ না হলে আজ দু’দিন বিক্রি ভাল। সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ৫০ টি সোয়েটার বিক্রি করেছেন। তবে বেশী দাম হাকছেন তিনি।
জব্বার বিপনী বিতানের ব্যবসায়ী ইসমাঈল হোসেন জানান, আগে থেকে মাল তুলেছিলেন ঘরে। শীত না হওয়াতে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। কিন্তু না। দু’দিন যেভাবে ঠান্ডা পড়ছে তাতে মনে হয় লসের টাকা তাকে আর গুনতে হবেনা। গত মাসে বেচাকেনা কম ছিল। মাস পহেলা থেকে বিক্রি বেড়েছে তার।
একই মার্কেটের ব্যবসায়ী মো: খুরশীদ আলম জানান, বড়দের থেকে বাচ্চাদের পোষাক বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। বিশেষ করে মোজা, মাফলার ও টুপি বেশী বিক্রি হচ্ছে।
গরম কাপড় কিনতে রূপসা শ্রীরামপুর থেকে নগরীর নিক্সন মার্কেটে এসেছিলেন রায়হান দম্পত্তি। শীতের বসনের দাম শুনে রীতিমতো বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে গেলেন তারা। অভিযোগ করে বলেন, আগের বছর থেকে তুলনামূলকভাবে এবার কাপড়ের দাম বেশী রাখা হচ্ছে। দর দাম করে অনেক কষ্টে কাপড় ক্রয় করেছেন।
ক্রেতা মো: মিজানুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, দাম এবার বেশ চড়া। পাঁচশ’ টাকার জিনিষ ১৫শ’ টাকা। পুরানো জিনিষের দাম যে নতুনের চেয়ে বেশী হয় তা তার জানা ছিলনা। কপড় ক্রয় না করে তিনি বাড়ি ফিরে গেলেন।
গরম কাপড়ের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কামরুল ইসলাম বাপ্পি খুলনা গেজেটকে জানান, মূলত: চিটাগাং থেকে এ মাল ক্রয় করা হয়। করোনার কারণে গত বছরও এটি দেশে আসেনি। এবারও একই ঘটনা ঘটেছে। গেল বছরের অবিক্রিত কপড় এবার বের করে বিক্রি করা হচ্ছে। না আসলে আগামী বছরেও এ দামে ক্রেতারা কিনতে পারবেনা। তাছাড়া প্রতি বেলে কাপড় আমদানিকারকরা শতকরা ২৫ ভাগ টাকা বাড়িয়েছেন বলে তিনি আরও জানান।