বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর অবস্থা পাল্টে গেছে। তার অনুসারী নগর শাখার পাঁচটি কমিটি নেতৃবৃন্দ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। থানা কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্যে এখনও নগরের নয়া কমিটির প্রতি আস্থা দেখায়নি। ৯ ডিসেম্বর বিএনপির জেলা ও নগর কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকে স্পষ্টত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস উপলক্ষে উভয়পক্ষ শোডাউনের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করে।
দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির দেওয়ার ঘোষণা করেন। তার স্থলে সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিতকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মৌখিকভাবে সকল জেলাকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হওয়ার পর বিএনপি শিবিরের নিত্য দিনের চিত্র পাল্টে গেছে। সদ্য অব্যাহতি পাওয়া সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিলুপ্ত কমিটির অনেকেই লোক চক্ষুর অন্তরালে গেছে। খালিশপুর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক এসএম আরিফুর রহমান মিঠু পদত্যাগ করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ছাত্রদল ও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হওয়ার পর সক্রিয় কর্মীরা মনোবল হারিয়ে ফেলেছেন।
সোনাডাঙ্গা থানার সাধারণ সম্পাদক ও সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি আসাদুজ্জামান মুরাদ জানান, কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর মঞ্জু অনুসারীদের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেকেই মুঠোফোন বন্ধ রেখেছেন। সদ্য অব্যাহতি পাওয়া সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। দৌলতপুর থানা শাখার সভাপাতি শেখ মোশাররফ হোসেন, খালিশপুর থানা শাখার সভাপতি এড. ফজলে হালিম লিটন ও সদর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম আরিফুজ্জামান অপু এ মুহুর্তে দলের কর্মীদের এড়িয়ে চলছেন।
সদ্য অব্যাহতি পাওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। তিনি কোনরূপ যোগাযোগ রাখছেন না। সকাল থেকে মন খারাপ। তার পরবর্তী পদক্ষেপ জানা সম্ভব হচ্ছে না। ১২ ডিসেম্বর খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নয়া কমিটি নিয়ে পূণর্বিবেচনার দাবিকে হাইকমান্ড স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। সংবাদ সম্মেলনে হাইকমান্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন। যদিও তার অব্যাহতি পত্রে কোন কারণ উল্লেখ করা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনের করায় কেন্দ্র তাকে ১৫ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। তার জবাবও তিনি দিয়েছেন। এতে হাইকমান্ড সন্তুষ্ঠ হতে পারেননি। মূলত: সংবাদ সম্মেলন করে শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।