মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জেড পাথরের একটি খনিতে ভূমিধ্বসে অন্তত একজন নিহত ও আরও শতাধিক নিখোঁজ রয়েছেন। বুধবার দেশটির কাচিন রাজ্যের জেড পাথর সমৃদ্ধ হপাকান্ত এলাকার খনিতে ভূমিধ্বসে হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
উদ্ধারকারী দলের সদস্য কো নাই ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, উত্তরাঞ্চলের কাচিন রাজ্যের হপাকান্তের জেড খনিতে বুধবার ভোর ৪টার দিকে ভূমিধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৭০ থেকে ১০০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আহত ২৫ জনকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এছাড়া দুর্ঘটনাস্থল থেকে একজনকে মৃত উদ্ধার করা হয়েছে।’
নিখোঁজদের দেহের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে প্রায় ২০০ উদ্ধারকারী। উদ্ধারকারীদের অনেকেই নৌকায় করে পাশের একটি হ্রদে তল্লাশি চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্বে অভিজাত শ্রেণির কাছে তুমুল জনপ্রিয় সবুজ রংয়ের প্রায় স্বচ্ছ রত্নপাথর জেড। মিয়ানমার বিশ্বে এই পাথরের সবচেয়ে বড় উৎস। দেশটির প্রতিবেশী চীনেও এই জেড পাথরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রত্যেক বছর মূল্যবান জেড পাথর খনি থেকে উত্তোলন ও খনির বর্জ্যে খুঁজতে গিয়ে দেশটির অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়ে ফেলেন।
মিয়ানমারের জেড বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র কাচিন রাজ্যের হপাকান্তে গত বছর প্রবল বর্ষণ কারণে সৃষ্ট ভূমিধ্বসে অন্তত ৩০০ শ্রমিকের খনিতেই সমাধি হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকে দেশটিতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এর মাঝেই করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনীতির ওপর নেমে আসা চাপ সামলাতে দেশটির শত শত অভিবাসী শ্রমিক নতুন করে জেড খনির কাজে আকৃষ্ট হচ্ছেন।
দেশটির নেত্রী অং সান সু চি ক্ষমতায় আসার পর এই খাতের শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি এবং অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি বলে সমালোচকরা বলছেন।
বিশ্বের অত্যন্ত মূল্যবান জেড পাথরের প্রায় ৯০ শতাংশ উত্তোলন হয় মিয়ানমারে। যার বেশিরভাগই পাওয়া যায় দেশটির কাচিন রাজ্যের হপাকান্তে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, স্বচ্ছ রত্নপাথর জেড উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর এলিট এবং জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তারা এই খাত থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলর আয় করছে।
খুলনা গেজেট/এনএম