চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫ লাখ ৩২ হাজারে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইউক্রেন, ভিয়েতনাম, ফ্রান্স ও জার্মানি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ কোটি ৫৭ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৩ লাখ ৭৬ হাজার।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ৮৩৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৩০০। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৩ লাখ ৭৬ হাজার ১৮৮ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩১ হাজার ৯০২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৭৫ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮৭ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ২৪২ জন এবং মারা গেছেন ৫২০ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ২০ লাখ ২৮ হাজার ৫১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ২৮ হাজার ৬১১ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ১৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৭ হাজার ২২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৮১২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৮ হাজার ২২২ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯১ হাজার ৭৪৩ জন এবং মারা গেছেন ৪৪ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ১২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৬১ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৭৫ জন এবং মারা গেছেন ২২৪ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৭১০ জন এবং মারা গেছেন ২৮০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬৮ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৯ হাজার ২৪৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫৩৬ জন এবং মারা গেছেন ১৫৭ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৭ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২২ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৯০৫ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫৫৪ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ৪১ জন, তুরস্কে ১৭৬ জন, হাঙ্গেরিতে ৩৬৬ জন, বুলগেরিয়ায় ১৫৭ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১০৫ জন এবং ভিয়েতনামে ২২৫ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২৩ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৫৮ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।