বাগেরহাটের চিতলমারীতে লতিকা হালদার (৩৫) নামের এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ৩ টায় গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় ওই গৃহবধুকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ দিন রাত সাড়ে ১১ টায় সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত লতিকা উপজেলা সন্তোষপুর গ্রামের কানাই লাল মজুমদারের স্ত্রী ও একই উপজেলার চরবানিয়ারী উত্তরপাড়া গ্রামের যশমন্ত হালদারের বড় মেয়ে।
লতিকার বাবার অভিযোগ যৌতুকের জন্য মারপিট করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিষ খাইয়ে তার মেয়েকে হত্যা করেছে। লতিকার শ্বশুর বিবেকানন্দ মজুমদার বলেছেন পরিবারিক কলহের জেরে বিষ খেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।
মৃত লতিকার ৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধুর বাবার বাড়ির এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে লতিকার বাবা যশমন্ত হালদার বলেন, ‘২০১৪ সালে আমার বড় মেয়ে লতিকাকে সন্তোষপুর গ্রামের বিবেকানন্দ মজুমদারের ছোট ছেলে কানাই লাল মজুমদারের সাথে বিয়ে দিয়েছিলাম। বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে জামাই কানাই লাল এ পর্যন্ত প্রায় চার লাখ টাকা নিয়েছে। গত কয়েকদিন আগে কানাই মাইক্রোবাস কেনার জন্য আরো চার লাখ টাকা দাবি করে। এ টাকা নিতে লতিকা দুইদিন আগে আমাদের বাড়িতে আসে। তাঁকে অতটাকা একসঙ্গে দিতে পারিনি। বলেছিলাম জমি বিক্রি করে পরে দিব। এরপর লতিকা টাকা না নিয়েই শ্বশুরবাড়ি ফিরে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার দুপুরে কানাই লালসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে মারপিট করে বিষ খাইয়ে দেয়। প্রথমে তাঁকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ দিন রাত সাড়ে ১১ টায় সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।’
লতিকার শ্বশুর বিবেকানন্দ মজুমদার বলেন, ইলিশ মাছ ও বোয়ালমাছ কাটা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ হয়। এ নিয়ে লতিকা বিষ পান করে। পরে হাসপাতালে নিলে সে মারা যায়।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) তদন্ত মো. ইকরাম হোসেন বলেন, লতিকার মৃত্যু খুলনা মেডিকেল কলেজে হয়েছে। ওখানে তাঁর ময়না তদন্ত হবে। অভিযোগ দিলে আপাতত অভিযোগ নেওয়া হবে। প্রাথমিক তদন্তও চলবে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই