নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা মামলার রায়ে ১৩ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে অনাদায়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন দেলোয়ার হোসেন দেলু, মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম, আনোয়ার হোসেন সোহাগ, সামছুদ্দিন সুমন, রাসেল, মাইন উদ্দিন সাজু, ইস্রাফিল হোসেন মিয়া, মো.রহিম ও নুর হোসেন বাদল।
মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা ২০ মিনিটের দিকে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর মামুনুর রশীদ লাভলু। এর আগে ৯ আসামিকে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাত নয়টার দিকে বেগমগঞ্জের দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুসহ ১৪-১৫ জনের একদল দুর্বৃত্ত জোর করে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। তারা ঘরে থাকা নারী ও তার স্বামীকে মারধর, নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা এবং পুরো ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। একপর্যায়ে ঘটনার ৩২ দিন পর ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।
পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর দেলোয়ার বাহিনীর নয়জন সদস্যের নাম উল্লেখ করে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে মামলার থেকে অব্যাহতি দিয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। পলাতক চার আসামিরা হলো আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান তারেক। তাদেরকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি এ মামলায় মোট ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পিবিআই। অভিযুক্তদের মধ্যে ৯জন আসামি জেল হাজতে রয়েছে এবং ৪ আসামি পলাতক রয়েছে। গত এক বছরে আদালত বাদীসহ ৪০ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে ৩০ কার্যদিবসে শুনানি শেষে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ধর্ষণ, নির্যাতন এবং পর্ণগ্রাফি আইনে তিনটি মামলা করেন নির্যাতিত নারী। তিনটি মামলার মধ্যে ৪ অক্টোবর ধর্ষণের মামলায় দেলোয়ার ও আবুল কালামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। আর বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার রায় আজ দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম