বৃহস্পতিবার কেন্দ্র ঘোষিত খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপি’র কমিটি থেকে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বাদ পড়েছেন। তিন সদস্যের কমিটিতে তিনি স্থান পাননি। এই ফরমুলা ২০০৪ সালে তিনি নিজেই সৃষ্টি করেছিলেন। ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর সর্বশেষ কমিটিতে তার প্রতিপক্ষ গ্রুপের কাউকে নগর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেননি।
বৃহস্পতিবার বিএনপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের জেলা ও নগর শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। মহানগর কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা শাখার বিদায়ী সভাপতি ও কেসিসি’র সাবেক কাউন্সিলর এস এম শফিকুল আলম মনা। এ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সুন্দরবন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি তরিকুল ইসলাম জহির ও সদস্য সচিব নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শফিকুল আলম তুহিন। জেলা শাখায় আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা শাখার বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ও কমার্স কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস আমীর এজাজ খান। এ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ছাত্র নেতা আবু হোসেন বাবু ও সদস্য সচিব রূপসা উপজেলার শ্রীফলতলা ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল হাসান বাপ্পী।
এ কমিটি ঘোষণার পর নজরুল ইসলাম মঞ্জুর অনুসারিদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর রাজনৈতিক মেরুকরণ শুরু হয়েছে। খুলনা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও নগর বিএনপির সদ্য সাবেক সহ সভাপতি মুন্সি সাহারুজ্জামান মোর্তুজা তার পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। ১২ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদকদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে আন্দোলনমুখি কমিটি গঠনের ওপর জোর দেয়া হয়। এ সভার পর তিনি নিশ্চিত ছিলেন নগরের নেতৃত্বে তিনি আসছেন। তিনি বলেন, যেহেতু পূর্বের কমিটি খুলনায় আন্দোলন তীব্রতর করতে পারেনি। সেহেতু কেন্দ্র নতুন নেতৃত্বের কথা ভাবছেন।
২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর নগর বিএনপি’র সম্মেলনের পর নয়াকমিটিতে খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তৎকালীন আহ্বায়ক আলী আজগর লবী, সাবেক মেয়র শেখ তৈয়েবুর রহমানকে কমিটিতে রাখা হয়নি। এমনকি কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যও রাখা হয়নি। বাদ পড়ে তাদের অনুসারিরাও। এবারের আহ্বায়ক কমিটিতে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর অনুসারিরা বাদ পড়েছেন। যেন আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
১২ অক্টোবর রুদ্ধদ্বার বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোন দিনে সম্মেলনের জন্য তৎপর থাকতে বলা হয়। হাই কমান্ডের কড়া বার্তা ছিল পকেট কমিটি নয়, কাউন্সিলের মাধ্যমে হবে তৃণমূলের কমিটি। রুদ্ধদ্বার বৈঠকের সিদ্ধান্ত রাতারাতি পরিবর্তন হলো।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ইতিপূর্বে এ প্রতিনিধিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, কেন্দ্রের দু’জন প্রতিনিধি স্থানীয় রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে উপ-দলের সৃষ্টি করেছেন। এতে কর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তিনি এই দুই প্রতিনিধিকে খুলনার রাজনীতি থেকে প্রত্যাহারের জন্য হাইকমান্ডের কাছে ব্যক্তিগত চিঠি পাঠিয়েছেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও তার অনুসারিরা নয়া কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নিতে যাচ্ছেন। কর্মসূচি চূড়ান্ত না হলেও এ সপ্তাহে তারা কমিটি সম্পর্কে পুন:বিবেচনা করার জন্য কেন্দ্রকে আল্টিমেটাম দিতে পারেন। আগামীকাল ১২ ডিসেম্বর বেলা ১১.৩০ মিনিটে খুলনা প্রেস ক্লাব ব্যাংকুয়েট হলে সংবাদ সম্মেলনে
বক্তব্য রাখবেন নজরুল ইসলাম মন্জু। সেখানে তিনি অবস্থান পরিষ্কার করবেন বলে জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এএ