চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে ৬ লাখের ঘর।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া, জার্মানি, ইউক্রেন, পোল্যান্ড, ব্রাজিল ও ভারত। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৬ কোটি ৩৭ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫২ লাখ ৪১ হাজার।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ হাজার ১৭৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে পাঁচ শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫২ লাখ ৪১ হাজার ৫৪১ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৫৯ হাজার ১৪২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৮০ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার ৪৯৪ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৮ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৬ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৯৫ লাখ ৭১ হাজার ৫৪৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৭৭ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২২৬ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩২ হাজার ৮৩৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৭১৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৯ জনের।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ হাজার ৮৮৭ জন এবং মারা গেছেন ৪১৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৯ লাখ ৫৩ হাজার ৩১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২ হাজার ৫৫২ জন মারা গেছেন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৩৭৪ জন এবং মারা গেছেন ১৭১ জন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৯৬০ জন এবং মারা গেছেন ৫৫৭ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৬৬ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১১ হাজার ৪১৩ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২১ লাখ ৫ হাজার ৮৭২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৫ হাজার ২০ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৫ হাজার ৪৩৯ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫৩২ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ৮২ জন, তুরস্কে ১৯৬ জন, পোল্যান্ডে ৫৭০ জন, হাঙ্গেরিতে ১৯২ জন এবং ভিয়েতনামে ১৯৬ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২৯৬ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৪৬ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।