পাবনার ঈশ্বরদীতে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ-গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাতে উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের নৌকার বিজয়ী প্রার্থী আনিছুর রহমান শরিফ ও পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী আনিছুল হক মোল্লা সমর্থকদের মাঝে চরকুড়ুলিয়া গ্রামের কামালপুর চরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন বাঁশেরবাঁধা এলাকার চরকুড়ুলিয়া গ্রামের নুরুল মালিথার ছেলে আলম বাদশা (৫০), চরকুড়ুলিয়া গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে জনি ইসলাম (২৮), চরকুড়ুলিয়া গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে মামুন হোসেন (৩০), শাহ জামাল (৩৬), শফি ঘোষ (৪০)। বাকিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড থেকে সদ্য নির্বাচিত মেম্বার আসাদুল ইসলাম প্রামাণিকের সঙ্গে একই এলাকার প্রতিপক্ষ জামায়াত আলী মালিথার ছেলে শাহজামাল মালিথার নির্বাচন কেন্দ্রীয় বিরোধ সৃষ্টি হয়।
নির্বাচিত আসাদুল এবার নৌকা প্রতীকে লক্ষ্মীকুন্ডা ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরীফের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করেন। এই নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে আসাদুল প্রামাণিকের সঙ্গে শাহজামাল মালিথার বিরোধ চলে আসছিল।
এই বিরোধের জের ধরেই মেম্বার নির্বাচিত হয়েই আসাদুল মিছিল করে এসে প্রতিপক্ষ শাহজামাল ও তার পক্ষের লোকজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা এই সময় রামদাসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে রড সিমেন্ট, মুদি ও ওষুধের দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতার রূপ নেয়। সেই ঘটনার পরেরদিন মঙ্গলবার রাতে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। অনেকে গুলিবিদ্ধ হলে তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত ডা. আব্দুল হামিদ জানান, সংঘর্ষের পরে ইমার্জেন্সি বিভাগে ৪ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে বাদশা আলমের অবস্থা গুরুতর।
পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী আনিছুল হক মোল্লা বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা আমাদের মধ্যে নয়। এটা মেম্বারদের মধ্যকার ঘটনা। বিজয়ী নৌকার প্রার্থী আনিছুর রহমান শরিফের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। গতকাল রাত থেকে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, রাতে লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফিরোজ কবির জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। হামলার ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।