ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত। শ্রম আদালত আইন ব্যবসা করেন। ৫নং মিয়াপাড়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। মৃত মোঃ তারিফ উল্লাহ তার পিতা এবং মৃত মোসাঃ শামছুন নেসা খাতুন তার মা। পারিবারিক নাম খোকন। সাতক্ষীরা মহাকুমার শ্যামনগর থানার নকিপুর হরিচরণ বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাশ। ১৯৬৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগে খুলনাস্থ সেন্ট যোসেফস হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ১৯৭২ সালে বিএল কলেজ থেকে আইএসসি, ১৯৭৬ সালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে বিএ ও ১৯৮১ সালে খুলনা সিটি ‘ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাশ করেন।
১৯৬৭ সালে ছাত্রলীগে যোগাদনের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতে খড়ি। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অধীনে ছাত্রলীগের সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন, ১৯৭০ সালে দৌলতপুর সরকারি বিএল কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের মনোনয়নে সর্বাধিক ভোটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৩-৭৪ সালে জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, ৭৪-৭৫ সালে জেলা শাখার সভাপতি, ১৯৭৮ সালে জাসদের নগর শাখার সভাপতি একইসাথে জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে জাসদ দ্বিধাবিভক্তির পর তিনি বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাথে সম্পৃক্ত হন। দীর্ঘসময় বাসদের খুলনা জেলা পাঠকচক্রের সমন্বয়কারির দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক কারণে ১৯৭৪ সালে গ্রেফতার হন। ৭৫ সালে মুক্তি পান। তিনি আইন পেশার সাথে সম্পৃক্ত।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক, নগর ভবন, পিকচার প্যালেস মোড় এলাকায় ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ শ্লোগান লিখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত স্থানীয় পিটিআই মাঠে জয় বাংলা বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণদানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। ২৩ মার্চ পিটিআই মাঠে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।
২৫ মার্চ খুলনা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে প্রাথমিক প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেন, ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের উদ্দেশ্যে খুলনা ত্যাগ করেন। বিএলএফ এর সদস্য হিসেবে আসামের হাফলং ট্রেনিং সেন্টারে বিশেষ গেরিলো ট্রেনিং গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট শেখ কামরুজ্জামান টুকু ও ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান (পরবর্তীতে সংসদ সদস্য) এর নেতৃত্বে সাতক্ষীরা সীমান্ত পার হয়ে বিএলএফ লিডার বাহিনীর প্রথম ব্যাচে দেশে প্রবেশ করে তালা থানার বিভিন্ন গ্রামে গোপনে অবস্থান নেন। মুজিব বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার মরহুম ইউনুস আলী ইনু ও আব্দুস সালাম মোড়লের নেতৃত্বে তালা থানার মাগুরা ক্যম্পে অবস্থান করে স্থানীয় যুবকদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা এবং প্রশিক্ষণে বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। তালা থানার মাগুরা, জেঠুয়া, পাইকগাছা থানার কপিলমুনি, বুধহাটা ও পাটাকেলঘাটায় ক্যাম্প স্থাপনসহ যুদ্ধে অংশ নেন। পাকিস্তান বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে সম্মুখসমর যুদ্ধে অংশ নেন।
১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর বটিয়াঘাটা থানার বারোআড়িয়ার যুদ্ধে আত্মঘাতি বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেন। বৃহত্তর খুলনার মুজিব বাহিনীর প্রধান শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে ১৭ ডিসেম্বর খুলনা শহর বিজয়ে অংশ নেন।
খুলনা গেজেট/এমএম