সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ শত বছর আগের কোনও এক পূর্ণিমা তিথিতে পাপমোচন এবং পুণ্যলাভে গঙ্গাস্নানের স্বপ্নাদেশ পান। সেই থেকে শুরু হয় রাস মেলা। আবার কারও কারও মতে, শারদীয় দুর্গোৎসবের পর পূর্ণিমার রাতে বৃন্দাবনবাসী গোপীদের সঙ্গে রাসনৃত্যে মেতেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।
কার্ত্তিক-অগ্রহায়ণের শুক্লপক্ষের ভরা পূর্ণিমায় সাগর যখন উছলে ওঠে, লোনা পানিতে ধবল চন্দ্রালোক অপার্থিব সৌন্দর্য রচনা করে। চন্দ্রিমার সেই আলোকমালায় সাগর-দুহিতা জলে পূর্ণ স্নানের জন্য ভোর থেকে খুলনা জেলার পাইকগাছা পৌরসভার শিববাটী রাস মন্দিরে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তদের আগমনে মুখরিত হয়।
সেখানে রাস পূজা ও প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনায় বসেন পুণ্যার্থীরা। তারা সাগর থেকে আসা জ্বলকে সামনে নিয়ে নির্জনে কৃষ্ণপূজার সঙ্গে দেবতা নীল কমল আর গঙ্গাদেবীর আরাধনায় নিমগ্ন হন। পূজা শেষে পাপমোচন করেন সমুদ্রস্নানে। সূর্যোদয়ে পানিতে ভাসিয়ে দেন ফল, ফুল। ঢাক-ঢোলক-কাসা-মন্দিরা বাজিয়ে ভজন-কীর্তনে নিনাদিত করেন চারপাশ।
পৌরসভার ছয়টি মন্দিরের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ রাস উৎসবে রাস মন্দিরের সভাপতি সন্তোষ কুমার সরদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু। মেলা উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর।
বিশেষ অতিথি ছিলেন এড. অজিত কুমার মন্ডল, সমীরণ সাধু, আনন্দ মোহন বিশ্বাস, মাহাবুবুর রহমান রজ্ঞু, কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন, এস এম ইমদাদুল হক, এস এম তৈয়বুর রহমান, আসমা আহম্মদ, এম এম আজিজুল হাকিম। উপস্থিত ছিলেন এম মোসলেম উদ্দীন আহম্মেদ, জগদিশ রায়, মৃত্যুঞ্জয় সরদার, অনিতা মন্ডল, আসাদুজ্জামান আসাদ ও বাবুরাম মন্ডল।
আয়োজক কমিটি জানিয়েছেন প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রাস মেলায় হাজার হাজার পূণ্যার্থীরা যোগে পূন্যস্নানের জন্য সমবেত হয়। গত বছর যে সমস্ত ভক্তবৃন্দ মানত করেছিল তার ফল পাওয়ায় এ বছর তারা মানত পরিশোধ করেছে এবং এ বছরও বহু ভক্তবৃন্দ তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য মানত করেছেন বলে জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম