খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার

তেরখাদার আলোচিত শিশু তানিশা হত্যা মামলার রায় আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চারিদিকে ঘোর অন্ধকার। ঘরের ভেতর থেকে হঠাৎ দাপাদাপির শব্দ। বারান্দায় নামাজরত তানিশার দাদী। নামাজ শেষ করে ঘরের সামনে গেলে শব্দ বন্ধ হয়ে যায়। দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করে কোন লাভ হয়না। এ সময় হাজির হয় তানিশার ছোট চাচা রাজু শেখ। ডাকাডাকির পর দরজা খোলে তানিশার সৎ মা। দেখে তানিশাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। মারা গেলে হত্যার অভিযোগে পুলিশ সৎ মা তিথী আক্তার মুক্তাকে গ্রেপ্তার করে। তেরখাদা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামের আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য মো: খাজা শেখের মেয়ে আলোচিত তানিশা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ । সোমবার (১৫ নভেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ আদাল‌তে এ রায় ঘোষণা করা হবে। 

ভিকটিম তানিশার বাবা মো: খাজা শেখ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য। তার পোষ্টিং বান্দরবনে। তানিশা তার বাবার আগের স্ত্রীর সন্তান। বনিবনা না হওয়ায় আগের স্ত্রীকে তালাক দেয় খাজা শেখ। এর কিছুদিন পর তিনি ফকিরহাট উপজেলার আট্টাকি গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত হোসেন আলী শেখেল কন্যা তিথী আক্তার মুক্তাকে বিয়ে করেন। মুক্তারও আগে একটা বিয়ে ছিল। সেখানে ছয় বছর সংসার করে সে।

মামলার চার্জশিট সূত্রে জানা গেছে, তিথী আক্তার মুক্তা স্বামীর অবর্তমানে প্রায়ই মোবাইল ফোন, ম্যাসেঞ্জার ও ইমোতে বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলত। এ নিয়ে তাদের উভয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও ঝগড়া লেগে থাকত। ফারাবী প্রসেনজিৎ নামক এক ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব ও ভয়েস চ্যাটিং এর বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকারে পৌঁছে যায়। ২০২১ সালের ২ এপ্রিল ইমোতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। খাঁজা শেখ তাকে তালাকের হুমকিও দেয়। পরে ইমোতে খাঁজা তার মেয়েকে আদর সোহাগ করে ডাকতে থাকে। এ নিয়ে মুক্তার মধ্যে জ্বালা যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে তানিশাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে মুক্তা।

তানিশা রাতে মুক্তার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতো। ঘটনার দিন (৫ এপ্রিল) রাতে তাদের মধ্যে আবারও ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে খাঁজা শেখ এলাকায় বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয়। স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য মুক্তা এ হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে সে।

জবানবন্দিতে সে আরও জানায়, ওই দিন রাতে বারান্দায় সেলাই মেশিনের ওপর একটি দা নিয়ে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে মুক্তা। সে সময় তানিশা খাটে ঘুমিয়ে ছিল। ঘুমন্ত তানিশাকে দা দিয়ে গলায় ও মাথায় কুপিয়ে জখম করে। দাপাদাপির শব্দ শুনতে পেয়ে দাদী ও চাচা এগিয়ে এলে পরক্ষণে দরজা খুলে ঘরের বাইরে চলে আসে মুক্তা।

ঘরের ভেতর গিয়ে চাচা ও দাদী রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পেয়ে তেরখাদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে নিহতের দাদা বাদী হয়ে তিথী আক্তার মুক্তাকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ বছরের ৩১ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম তিথী আক্তার মুক্তাকে আসামি করে এ হত্যা মামলা চার্জশিট দাখিল করেন। আদালতে মোট ২২ জন স্বাক্ষ্য দিয়েছেন।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!