ফরিদপুরের সালথায় কারাগার থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ও উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসারত হোসেন। দ্বিতীয় ধাপের উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বাদী হয়ে করা একটি মামলায় প্রায় ৭ মাস ধরে তিনি ফরিদপুর জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার (১২ নভেম্বর) জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইসারত হোসেন টেলিফোন প্রতীকে ৩ হাজার ৩৪৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন (টেবিল ফ্যান) পেয়েছেন ১ হাজার ৭৯২ ভোট।
জানা যায়, এ বছরের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় সালথার ফুকরা বাজারে লকডাউনের কার্যকারিতা পরিদর্শনে যান সালথার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি। এ সময় তার গাড়ি থেকে নেমে কয়েক ব্যক্তি বাজারে উপস্থিত কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে বলে অভিযোগ ওঠে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা গুজব ছড়িয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ সালথা উপজেলা চত্বরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে সরকারি দফতর ও থানায় তাণ্ডব চালায়। দুটি সরকারি গাড়িসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ২ যুবক নিহত হন। আরেক যুবক পুলিশ হেফাজতে মারা যান।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করে। এই দুই মামলায় সালথা থানা পুলিশ গত ১৪ এপ্রিল ইসারত হোসেনকে গ্রেফতার করে। এর পর থেকে ইসারত ফরিদপুর জেলহাজতে রয়েছেন। জেল থেকেই তিনি রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ হয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, রামকান্তপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছিলেন মো. আশরাফ আলী। আর স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেছেন সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইমারত হোসেন, উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসারত হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন। এর মধ্যে ইসারত হোসেন কারাগার থেকে নির্বাচনে অংশ নেন।