খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ১৩ বছরের কিশোরী চাঞ্চল্যকর সিরিজ ধর্ষণ মামলার আসামি সৈয়দ মোঃ শাহিনকে (৫০) অবশেষে দিঘলিয়া থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
ধর্ষিতা কিশোরীর হতদরিদ্র পিতার দায়ের করা মামলার ৬৮ দিন পর সোমবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার সময় বাগেরহাট জেলার সদর খানজাহান আলী মাজার এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আজ মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকালে দিঘলিয়া থানায় হাজির করে।
পুলিশ জানায়, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রিপন কুমার সরকারের নেতৃত্বে দিঘলিয়া থানার একদল পুলিশ সাদা পোশাকে গত দুই দিনে বাগেরহাট জেলা সদরে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত শাহিনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কোর্টে প্রেরণ করেছে। আগামীকাল কোর্টে তাঁকে কয়েকদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে বলে ইন্সপেক্টর তদন্ত রিপন কুমার সরকার খুলনা গেজেটকে জানিয়েছেন।
এদিকে, ধর্ষিত কিশোরী গত মাসের শেষের দিকে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন দিঘলিয়া ইউপি সদস্য মোঃ হারুন-অর-রশিদ।
১ সেপ্টেম্বর সকালে দিঘলিয়া সদর ইউনিয়নের ফারমাইসখানা ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ধর্ষিতা কিশোরীর হতদরিদ্র বাবা স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদের সহায়তায় দিঘলিয়া থানায় হাজির হয়ে সৈয়দ মোঃ শাহিন এর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়েকে গত ২ জানুয়ারি থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। শাহীন তার পূর্ব পরিচিত এবং প্রতিবেশী হওয়ায় তার মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে, ভুল বুঝিয়ে এবং লোভ-লালসা দেখিয়ে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নিজ বাড়ির ঘরের ভেতর ধর্ষণ করতো। ২৯ আগস্ট আমার মেয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে নগরীর ফুলবাড়িগেট খানজাহান আলী থানার অন্তর্গত মমতার ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান আপনার মেয়ে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে ক্লিনিকে নেয়ার সংবাদ জানার পর থেকে সৈয়দ মোঃ শাহিন পলাতক ছিল।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, এ ঘটনা ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় অসামাজিক এবং অনৈতিক কাজের অভিযোগ ছিল। এলাকার কিছু প্রভাবশালীর সংস্পর্শে থাকায় ইতিপূর্বে অনৈতিক কাজ করেও সে পার পেয়ে গেছে।