ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নিলসবনের এস্তাদিও দা লুজ স্টেডিয়ামে ফুটবলের মহারণের রাতে নেইমার-এমবাপ্পেদের ইতিহাস লিখতে দিল না বায়ার্ন।
ফাইনালের প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হলেও দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বায়ার্ন।
পিএসজিকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘরে তুলে নিল বায়ার্ন মিউনিখ।
এর আগে বাংলাদেশ সময় রবিবার রাত ১টায় লিসবনের স্তাদিও দা লুজ স্টেডিয়ামে শুরু হয় দুই দলের লড়াই। শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে উঠে খেলা। বেশ কয়েকটি সুযোগও তৈরি করে দুই দলের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের ১৯ মিনিটেই লিড নিতে পারত পিএসজি। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি নেইমারের।
এমবাপ্পের কাছ থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে জালের উদ্দেশে পাঠালেও বায়ার্নের দেয়াল ম্যানুয়াল ন্যুয়ার এক পা বাঁধা দিয়ে কোনোমতে বলটা ফেরান। ফের টাচলাইন থেকে বলকে আলতো ছুঁয়ে গোলপোস্টের সামনে দেয়ার জোর চেষ্টা করেন নেইমার। এবারও ন্যুয়ারের কারণে নেইমারের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এবার নেইমারের দুর্ভাগ্য এসে জমা হয় রবার্ট লেভানডোস্কির কপালে। ২২ মিনিটের সময় ডি বক্সের মধ্য থেকে শট নেন লেভা। পরাস্ত হন গোলরক্ষক কেইলর নাভাসও। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। গোলরক্ষকের ভূমিকায় দেখা যায় গোলবারকে। পরের মিনিটেই বল ছুটে চলে যায় বায়ার্নের রক্ষণে। সংঘবদ্ধ আক্রমণে ফের সুযোগ আসে পিএসজির। কিন্তু ডি মারিয়ার উত্তেজিত শট পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।
এর ভেতর ২৫ মিনিটে ধাক্কা খায় বায়ার্ন। ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন জেরোম বোয়াটেং। তাঁর জায়গায় নিকোলাস সুলেকে মাঠে নামান বায়ার্ন কোচ। এরপর ডাভিসের করা ফাউলের কারণে কর্নার পায় পিএসজি। কিন্তু কর্নারের সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।
৩২ মিনিটে সহজ সুযোগ পায় বায়ার্ন। নাব্রির বুদ্ধিদীপ্ত ক্রস থেকে ডি বক্সে উড়ে আসা বলে হেড করে জালে জড়ানোর অভিনব এক শৈলি প্রদর্শন করেন লেভানডোস্কি। যদিও কেইলর নাভাস লেভার সেই হেডকে আর জালে জাড়াতে দেননি।
তবে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের এমবাপ্পের বোকামোকে হয়তো অনেকে পিএসজি সমর্থকের মেনে নিতে কষ্ট হবে। আন্দার এরেরার পাস থেকে মাত্র ১০ গজ দূরে বল পেয়েও কোনাকুনি না খেলে গোলরক্ষক বরাবর মেরে দেন ফরাসি স্ট্রাইকার। যা লুফে নিতে কোনোই বেগ পেতে হয়নি কেইলর নাভাসের। ফলাফল গোলশূন্য সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে ফের শুরু হয় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। তবে এবার বায়ার্নকে একটু বেশি আক্রমণাত্মক দেখা গেছে। পিএসজির ডেঞ্জার জোনে বল আক্রমণের ছক আঁকতে থাকে। ম্যাচের ৫৯ মিনিটে আসে সফলতা।
ইভান পেরিসিকের তুলে দেয়া ক্রসে দুর্দান্ত হেড করে পিএসজির জালে বল জড়ান কিংসলে কোমান।
১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। এরপর রক্ষণ ধরে খেলে বায়ার্ন। বেশ কয়েকবার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপে-ডি মারিয়ারা।
এর মাঝে ৮০ মিনিটে লেভানদোভস্কিকে ধাক্কা দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন নেইমার। ইনজুরি সময়ে অবশ্য নেইমারকে শেষ সুযোগ করে দেন এমবাপে। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের কাছ থেকে নেইমারকে বল বাড়ান তিনি। তবে সতীর্থের বাড়ানো বলে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়ে পিএসজিকে হতাশ করেন ব্রাজিল সুপারস্টার। শেষের দিকে আর গোল না আসলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের। আর ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠেন নয়্যার-কোম্যানরা। এর আগে ১৯৭৪, ১৯৭৫, ১৯৭৬, ২০০১ ও ২০১৩ সালে মোট পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল জার্মানির এই ক্লাব।
খুলনা গেজেট / এমএম