ঘটনাবহুল ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর আজ। ১৯৭৫ সালের আজকের দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। সেনাবাহিনীর ভেতরে অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের মাঝে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ওই দিন মুক্ত হন। সে দিন বেশ কিছুু সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আজকের দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যা’ দিবস হিসেবে পালন করে। অন্যদিকে বিএনপি পালন করে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে। দিনটি ‘সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান’ দিবস হিসেবে পালন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ সামরিক বাহিনীতে একটি অভ্যুত্থান ঘটান। একই সময় সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করা হয়। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান সাধারণ সৈনিকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। সাধারণ সৈনিকরা জিয়াউর রহমানকে বন্দি করা এবং খালেদ মোশারফের অভ্যুত্থানকে সহজভাবে মেনে নেয়নি। তারা স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে ৬ নভেম্বরের মধ্যরাতের পর কামানের গোলাবর্ষণ করে সর্বাত্মক বিদ্রোহের সূচনা করে। ৭ নভেম্বর তারা জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে। খালেদ মোশারফ এবং তার সহযোগীরা পালাতে গিয়ে বিদ্রোহী সৈনিকদের হাতে ধরা পড়ে নিহত হলেন।
অভ্যুত্থানকারী সৈনিকরা ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে ঢাকার রাজপথে বেরিয়ে আসে। তারা ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব জিন্দাবাদ’, ‘সিপাহি-জনতা ভাই ভাই’, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেয়। জনগণ ফুলের মালা দিয়ে হর্ষধ্বনি তুলে বিপ্লবী সৈনিকদের অভিনন্দন জানাল। অনেকে ট্যাংকের ওপরে চড়ে বসল। এভাবে রচিত হলো সৈনিক ও জনতার মধ্যে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রত্যয়ে এক অচ্ছেদ্য বন্ধন।
খুলনার কর্মসূচি
৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করবে বিএনপি। এ উপলক্ষে খুলনায় ঐদিন দলীয় পতাকা উত্তোলন, দলীয় কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় আলোচনা সভা ও শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিলের অয়োজন করা হয়েছে নগর ও জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে গত ৩ নভেম্বর উক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
অন্যদিকে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপির অপর অংশ। এ উপলক্ষে ৮ নভেম্বর সোমবার বিকেল ৩ টায় খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আলোচনায় প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম।
কর্মসূচি সফল করতে এক প্রস্ততি সভা শনিবার দুপুরে বিএনপি নেতা শফিকুল আলম তুহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন আজিজুল হাসান দুলু, মুর্শিদ কামাল, শেখ সাদী, এহতেশামুল হক শাওন, আজিজা খানম এলিজা, মাসুদ পারভেজ বাবু, কে এম হুমায়ুন কবির, মাহবুব হাসান পিয়ারু, শেখ ইমাম হোসেন, কাজী নেহিবুল হাসান নেহিম, মতলেবুর রহমান মিতুল, শরিফুল আলম শরিফ, ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, মো: তাজিম বিশ্বাস, আনোয়ার হোসেন আনো, শরিফুল ইসলাম টিপু, ইয়াজুল ইসলাম অ্যাপোলো, ওয়াহিদুজ্জামান হাওলাদার প্রমুখ।