সুন্দরবনের উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে বাওয়ালীদের কাছে এক সময় আতংক, সাগর ও সুন্দরবনে দাঁপিয়ে বেড়ানো ৩২৬ দস্যু এখন অন্যান্য সাধারণ মানুষের মতো স্বাভাবিক নিয়মে সমাজেই বসবাস করছেন। ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় অস্ত্র জমা দিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সমঝোতায় আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন তারা।
আত্মসমর্পণের পর থেকে সরকার ও র্যাবের পক্ষ থেকে দস্যুদের বিভিন্ন সহযোগিতা করা হয়েছে। এবার এই দস্যুদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে র্যাব।
এরই অংশ হিসেবে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুদের মধ্যে বসত ঘর, দোকান ঘর, নৌকা, জাল, ট্রলার ও গবাদি পশু দেবে বিশেষ এই বাহিনীটি। আগামী মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকালে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আনুষ্ঠানিকভাবে দস্যুদের হাতে এসব উপকরণ তুলে দেবেন।
অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহার, বাংলাদেশ পুলিশের মহা-পরিদর্শক ড. বেনজির আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকার কথা রয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ৩২৬ জন দস্যুদের যেসব উপকরণ তুলে দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রয়োজনের ভিত্তিতে ১০২টি বসত ঘর, ৯০টি দোকান ঘর, প্রয়োজনীয় জালসহ ১২টি নৌকা, ৮টি ট্রলার ও ৮৮ গবাদি পশু দেওয়া হবে।
স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা আব্দুল বারেক তালুকদার শান্ত, মো. রিপন ও মাওলা ফকির বলেন, আমরা খুবই খুশি হয়েছি। র্যাবের দেওয়া ঘরে থাকতে পারবো। এখন আর বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না। গরু ছাগল পালন করে আয়ও করা যাবে।
র্যাব-৬ খুলনার সিইও লে. কর্নেল মোহাম্মাদ মোস্তাক আহমেদ বলেন, আত্মসমর্পণের পর থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুদের আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। তাদের নানাভাবে সহযোগিতাও করা হয়েছে র্যাবের পক্ষ থেকে। প্রতি ঈদের ঈদসামগ্রী ও নগদ অর্থও দেওয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতায় দস্যুদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১ নভেম্বর স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুদের মধ্যে আমরা ঘর, জাল, নৌকা, ট্রলার ও গবাদি পশু বিতরণ করব। আমরা বিশ্বাস করি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা এসব মানুষের জীবনমান উন্নয়নে এই উপকরণ ভূমিকা রাখবে।
খুলনা গেজেট/এনএম