গভীর রাতে মোবাইলে ফোন। অপরপ্রান্ত থেকে সালাম দিয়ে বলা হয়, ‘আমি জ্বীনের বাদশা। আপনার ভবিষ্যত খুব ভাল। আমার দোয়ায় আপনি লক্ষ্যস্থানে পৌছাতে পারবেন।’ এমন লোভনীয় আকর্ষণ কেউ ছাড়তে চায়না। লোভে পড়ে মানুষ অজানা অপরিচিত লোককে সবকিছু দিয়ে দিতে চায়। পরে তাদের আশা পূর্ণ না হলে ওই নম্বরে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে শুরু হয় হুমকি-ধামকি। আর এসব অভিযোগে বাগেরহাটের তথাকথিত জ্বীনের বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব- ৬ এর কর্মকর্তারা। তার নাম হানিফ ঢালী। বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার সোবহান ঢালীর ছেলে সে।
হানিফ ঢালী গত এক বছর ধরে জ্বীনের বাদশা সেজে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। গভীর রাতে ফোন দিয়ে জ্বীনের বাদশা বলে মানুষকে আশা দিত সে। গত এক বছরে চারজন মানুষকে সর্বশান্ত করছে। সর্বশেষ তিন দিন আগে একজনের সাথে প্রতারণা করতে গিয়ে র্যাবের কাছে আটক হয় সে।
২৩ অক্টোবর রাতে ভুক্তভোগী আবারও হানিফ ঢালীর কছে ফোন করে সাহায্য চায়। এ সময় তাকে সাহায্য করতে রাজি হয় প্রতারক। এরপর র্যাব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে রামপাল উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তার কাছ থেকে ১০ টি মোবাইল ফোনের সিম ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে র্যাব।
র্যাবের পুলিশ সুপার আল আসাদ মো: মাহফুজুর রহমান জানান, গত এক বছর ধরে হানিফ ঢালী জ্বীনের বাদশার পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। সম্প্রতি তার দ্বারা চারজন মানুষ সর্বশান্ত হওয়ার খবর তার কাছ থেকে পাওয়া গেছে। গত দু’দিন আগে এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা চার কিস্তিতে নিয়েছে সমস্যা সমাধানের কথা বলে। সমস্যার সমাধান তো হয়নি বরং তাকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি ও গালমন্দ করে হানিফ ঢালী। ভুক্তভোগী খুলনা র্যাব-৬ দপ্তরে বিষয়টি জানালে কর্মকর্তারা নড়ে চড়ে বসেন। র্যাব কর্মকর্তার সহায়তায় ওই ভুক্তভোগী প্রতারককে ফোন দিলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। তাকে রাতে গ্রেপ্তার করে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে সে সব বর্ণনা দেয়। গ্রেপ্তার হওয়া প্রতারক হানিফ ঢালীকে রামপাল থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
খুলনা গেজেট/এনএম