কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআন রাখার ঘটনায় গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনের উদ্দেশ্য কী ছিল, তা জানতে তাকে সাত দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার ইকবালকে কুমিল্লায় নেওয়ার পর শনিবার দুপুরে জেলা আদালতে হাজির করা হয়।
কুমিল্লার বিচার বিভাগীয় জ্যেষ্ঠ হাকিম মিথিলা জাহান নিপার আদালতে তুলে ইকবালকে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানায় পুলিশ।
কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর হোসেন জানান, ইকবালকে সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। ইকবাল ছাড়া আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের জন্য হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
তারা হলেন ইকরাম হোসেন রেজাউল, হাফেজ হুমায়ুন ও ফয়সাল আহমেদ।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় দায়ের করা কুরআন অবমাননার মামলায় তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআন রাখার ঘটনায় এ পর্যন্ত নয়টি মামলা হয়েছে এবং মোট ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।
ইকবালের (৩৫) বাড়ি কুমিল্লা শহরেরই সুজানগরের খানকা মাজার এলাকায়। ওই এলাকার নূর মোহাম্মদ আলমের ছেলে ইকবাল পেশায় রঙমিস্ত্রি।
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পন সংঘের পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হামলা, ভাংচুর চালানো হয় অন্তত আটটি মন্দিরে। তার জের ধরে সেদিনই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলা হয়, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন।
এর পরের কয়েকদিনে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়। তাতে নোয়াখালীতে নিহত হয় দুজন।
এর মধ্যে কুমিল্লা পুলিশ বুধবার নানুয়া দীঘির পাড়ের দুটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে ইকবাল নামে ওই যুবককে শনাক্তের কথা জানায়।
একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে এক যুবককে রাত ২টার পর স্থানীয় দারোগাবাড়ী শাহ আব্দুল্লাহ গাজীপুরী (রহ.) এর মাজার থেকে বেরিয়ে পূজামণ্ডপের দিকে যেতে দেখা যায়, তখন তার হাতে বই জাতীয় কিছু ছিল।
এরপর ৩টা ১২ মিনিটের দিকে তাকে পূজামণ্ডপের দিক থেকে ফিরে আসতে দেখা যায় আরেক ভিডিওতে, তখন তার হাতে ছিল একটি ‘গদা’।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির ওই পূজামণ্ডপে থাকা হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা ছিল। তখন হনুমানের মূর্তির হাতে থাকা গদাটি পাওয়া যায়নি।
এরপর বৃহস্পতিবার ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
খুলনা গেজেট/এনএম