বাগেরহাটের চিতলমারীতে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা চরম বিপাকে পড়েছেন। বৃষ্টিতে শ্রমজীবি মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে কৃষকের আগতি টমেটো ও নানা ধরনের সবজির ক্ষেত। সাথে বিপর্যস্ত গবাদিপশু ও প্রাণীকুল।
ভোগান্তির শিকার মানুষেরা জানিয়েছেন, গত সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টির কারণে উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষকেই বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে কর্মজীবী মানুষদেরও কম ভোগান্তি হয়নি। নিম্ন আয়ের মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে অটো, নছিমন, ভটভটি, ভ্যান কিংবা অন্যান্য কাজে ঘর হতে বের হয়েছেন।
গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের কৃষকরা। বেশির ভাগ জায়গায় পানি থাকার কারণে ঘর থেকে গরু-ছাগল বের করা সম্ভব হয়নি। এমন অবস্থায় এসব পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সাথে শ্রমজীবী মানুষের অলস সময় কেটেছে বলেও জানা গেছে।
চিতলমারী বাজারের ভ্যান চালক আলমগীর শেখ, মিজানুর শেখ, অটো চালক মো. ওয়াহিদুল, নছিমন চালক আসাদ শেখ বলেন, ‘দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে আমরা নাকাল অবস্থায় পড়েছি। আমাদের আয়ের উপরই সংসার চলে। তাই রুজির ধান্দায় বৃষ্টিতে ভিজে ঘর হতে বের হয়েছি। সামান্য কিছু আয়ও হয়েছে। এ দিয়ে চাল, ডাল ও নুন নিয়ে ঘরে ফিরব। তবেই রান্না-খাওয়া।’
সুরশাইল গ্রামের কৃষক গাউস গাজী ও অভি শেখ বলেন, ‘গরু বাছুর ও ছাগল নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। এ গুলো ঘর থেকে বের করতে পারছিনা। প্রাণী গুলোর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।’
খড়মখালী গ্রামের কয়েকজন সবজি চাষি বলেন, ‘আমরা একেক জনে আলাদা ভাবে ৩ থেকে ৪ হাজার করে টমেটো গাছের ও বিভিন্ন সবজির চাষ করেছি। আমাদের ফলন্ত টমেটো গাছ গুলো স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে। তারমধ্যে আবার টানা বৃষ্টি শুরু হলো। তাই আমাদের আগতি টমেটো ও নানা ধরনের সবজির ক্ষেত ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে।’
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫ টায় চিতলমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকতা অসীম কুমার দাস মুঠোফোনে বলেন, ‘টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে এ পর্যন্ত এ উপজেলায় টমেটোসহ ১৪.৮২ একর সবজির ক্ষেত ও ৭.৪১ একর পাট বীজের ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে। বৃষ্টি আরও বাড়লে ক্ষতির পরিমান আরও বাড়বে। বিষয়টি আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
খুলনা গেজেট/ এস আই