বাগেরহাটে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গা পূজা শুরু হয়েছে। মন্ডপে মন্ডপে চলছে উৎসবের আমেজ। সোমবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ৬ষ্ঠী পূজার মাধ্যমে দূর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন সনাতন ধর্মালম্বীরা।
সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ভক্ত দর্শনার্থীদের ভীড় দেখা যায়। কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে, আবার কেউ বন্ধু বান্ধবের সাথে আসছেন পূজা দেখতে।
প্রিয় দেব-দেবীর প্রতিমা ও চোখ ধাঁধাঁনো আলোকসজ্জায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না মন্ডপে আসা ভক্ত-দর্শনার্থীরা। যে যার মত মাস্ক ছাড়াই মায়ের দর্শণ করছেন ভক্তরা।
তবে পূজা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মাস্ক বিতরণ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অমিত রায়।
বাগেরহাট শহরের দশানী সার্বজনীন মন্দিরে পূজা দেখতে আসা উজ্জল বৈরাগী বলেন, ‘সারা বছরই আমরা অপেক্ষা করি দূর্গা পূজার। দূর্গা পূজা আমাদের প্রাণের উৎসব। সন্ধ্যায় ৬ষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দূর্গা উৎসব শুরু হল। শুক্রবার দশমীতে এই উৎসব শেষ হবে। এই কয়েকদিন খুবই আনন্দ করব আমরা। মন্দিরে মন্দিরে ঘুরব, মাকে প্রনাম করব। আসলে এই সময়টা আমাদের জন্য খুই আনন্দের।’
গোটাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিজয় দে বলেন, ‘মহা ৬ষ্ঠীতে বন্ধুদের নিয়ে বেশকিছু মন্দিরে ঘুরেছি। প্রতিমা দেখেছি, খুব ভালো লেগেছে আমার। গতবছরের থেকে এই বছর ভালো লাগছে কারন করোনা প্রকোপ কমে গিয়েছে, তাই সব কিছু মোটামুটি স্বাভাবিক ভাবে হচ্ছে। প্রতিটা মন্দিরে শিশু কিশোররা আনন্দ করছে। সামনে ৪দিন আছে আরো ঘুরে দেখব।’
স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি মন্দিরে আসা অর্নব পাল বলেন, ‘বেসরকারি চাকুরী তেমন ঘোরার সুযোগ হয় না। পূজো উপলক্ষে স্ত্রী-সন্তানদের আবদার মেটাতে মন্দিরে এসেছি। মাকে প্রনাম করেছি। বাচ্চারাও খুব খুশি হয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য দূর্গা পূজা উপলক্ষে তিন দিনের ছুটির দাবি জানান এই বাবা।’
বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অমিত রায় বলেন, পূজা শুরুর আগে আমরা প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সাথে সভা করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ জন্য আমরা প্রতিটি মন্ডপে ভক্ত-দর্শনার্থীদের জন্য বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজের ব্যবস্থা করেছি। ভক্ত-দর্শনার্থীদের মাস্ক পরে প্রবেশের জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা সচেতন করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এবারে বাগেরহাটে প্রায় ৬৪০টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনছার সদস্যরা রয়েছেন। পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম রয়েছে। আশাকরি শান্তিপূর্ণভাবে আমরা দূর্গা পূজা শেষ করতে পারব।’
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, ‘বাগেরহাটে শান্তিপূর্ণভাবে দূর্গা পূজা শুরু হয়েছে। কোথাও কোন অপ্রিতিকর ঘটনার খবর নেই। পূজা মন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আমরা সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। এছাড়া মন্দির কমিটির কাছে পুলিশের টহল টিম ও স্থানীয় থানার মুঠোফোন নাম্বার দেওয়া আছে। কেউ কোন সমস্যা মনে করলে পুলিশকে অবহিত করার অনুরোধ করেন তিনি।’
খুলনা গেজেট/ এস আই