খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে
  আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ঋষভ পন্ত

মোংলা বন্দর জেটিতে সিএ্যান্ডএফ শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ, খালাস-বোঝাই বন্ধ

মোংলা প্রতিনিধি

মোংলা সমুদ্র বন্দর জেটিতে শ্রমিকরা বিশেষ পোষাক না পরায় জেটি থেকে নিরাপত্তাকর্মীরা শ্রমিকদের বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে বন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদীর বিরুদ্ধে শ্রমিকদের উপর গুলি করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বন্দর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিক্ষোভ করে জেটি এলাকার সকল পণ্য খালাস-বোঝাইয়ের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা।

খবর পেয়ে সিএ্যান্ডএফ’র মালিক ও তাদের এ্যাসেশিয়েশনের নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিক মোংলা বন্দরে এসে শ্রমিকদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে শ্রমিকদের জেটি এলাকার সকল পণ্য খালাস-বোঝাইয়ের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।

ঘটনার পর পরই জেটির অভ্যান্তরে বিভিন্ন কন্টেইনারে খালাস-বোঝাই কাজ বন্ধ করে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার গেটের সামনে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার অপসারণ ও কেন শ্রমিকদের গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে তদন্ত করে তার সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানিয়েছে তারা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বন্দর এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের ও নৌ কন্টিনজেন্ট সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। এরপর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার কার্যালয় ছেড়ে বাহিরে গিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা।

মোংলা বন্দর সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুলতান হোসেন খাঁন জানান, কাজে আসা শ্রমিক কর্মচারীরা এ্যাপ্রোন (বিশেষ পোশাক) পরে না আসায় এসকল শ্রমিকদের বন্দরের জেটিতে প্রবেশে নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দেয়। এ সময় কর্মচারীরা এমন নিয়ম শুনে আপত্তি করলে তাতে গুলি করার হুমকি দেয় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদী। এ ঘটনার পর পরই ক্ষুব্ধ হয়ে জেটি সরকাররা প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্তান নেয় এবং তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদী তার কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থান করছিলেন। শ্রমিকদের মালিকরাও তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে তার অপসারণের দাবী জানায়।

মোংলা বন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, ‘শ্রমিকরা কখন জেটি এলাকায় প্রবেশ করছে এবং কার গায়ে বিশেষ পোষাক (এ্যাপ্রোন) নেই তা আমি কিছুই জানিনা। আর আমিতো জেটির ভিতরে প্রবেশও করিনি। আর শ্রমিকদের গুলী করার প্রশ্নই ওঠেনা। তবে যারা আমার কথা বলেছে তারা প্রকৃত শ্রমিক নয়, কারণ শ্রমিকদের দেখভাল করার দায়িত্বে নিরাপত্তাকর্মীরা ও নৌ-বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে।’

মোংলা বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের (কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং) সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘মোংলা বন্দর যেখানে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হচ্ছে সেখানে আমরা এখন কাজ করতে পারছিনা। আমরা চাই সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বন্দরকে সচল রাখতে এবং অর্থনৈতিক ভাবে বন্দরের রাজস্ব বৃদ্ধি করতে।’ বন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা এ বন্দরকে অচল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন এ্যাসেশিয়েশনের এ নেতা।

তিনি আরো বলেন, ‘সামান্য পোষাক না পরায় আমাদের দুইজন শ্রমিক কর্মচারীকে গুলি করে মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তার অপসারণ ও সুষ্ঠ বিচার না হওয়া পর্যন্ত মোংলা বন্দরের জেটি এলাকায় সকল প্রকার কাজ বন্ধ থাকবে।’ আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে এ ঘটনার সুরাহা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন তিনি।

মোংলা বন্দরের হারবার মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দরের জেটিতে কিছু শ্রমিক পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকট্টে ইকুপমেন্ট) পোষাক না পরে জোরপূর্বক জেটিতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এসময় নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা দিলে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয় এবং প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার অফিস কার্যালয় নিয়ে যায়। সেখানে আলি হোসেন ও ইরাত হোসেনের জেটি লাইসেন্স রেখে দেওয়া হয়। যার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে অফিস থেকে শ্রমিকরা বের হয়ে আন্দোলনের চেষ্টা করে এবং প্রধান নিরাপত্তা অফিস ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। বন্দরের চেয়ারম্যান বা অন্যান্য কর্মকর্তার সাথে কোর প্রকার যোগাযোগ না করে বন্দরের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে কিছু সিএ্যান্ডএফ মালিক ও শ্রমিক কর্মচারীরা যা একেবারেই অনাকাংঙ্খিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!