‘মালা কার লাগিয়া গাঁথিরে মালা। কার লাগিয়া গাঁথি? অজানা কোন নদীর স্রোতে আমি হারাইয়াছি সাথিরে। মালা কার লাগিয়া গাঁথি?’ হৃদয় ছোঁয়া এই গানে প্রেম-ভালবাসায় আবেগ সম্পন্ন মানুষের মনকে নাড়া দেয়। গানের সুরে ব্যর্থ প্রেমিক-প্রেমিকেরা হারিয়ে যান পুরানো স্মৃতির পাতায়। জনপ্রিয় এই গানের সখির জন্য মালা গাঁথা না হলেও সাধারণ ভোটাররা গেঁথে রেখেছেন মালা। তাও আবার যে-সে মালা নয়। টাকার মালা। মালা পরাবেন তাঁদের বিজয়ী প্রার্থীর গলায়।
নির্বাচনে জয়ী চেয়াম্যান-মেম্বাররাও টাকার তৈরি জয়ের মালা গলায় পরে ঘুরছেন নিজ নির্বাচনী ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে। আর এ টাকার মালা পরানো যেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ২০ সেপ্টেম্ব এ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ১২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সাধারণ সদস্য প্রার্থী ২৩৭ জন ও ৮৪ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী অংশ গ্রহণ করেন। এদের মধ্যে ৭ জন চেয়ারম্যান, ২১ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ৬৩ জন সাধারণ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর জয়ীরা ছুটছেন ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে। ভোটাররাও কাঙ্খিত প্রার্থীর বিজয়ে উচ্ছ্বাসিত। তাঁদের জন্য গেঁথে রেখেছেন টাকার মালা। পরিয়ে দিচ্ছেন গলায়।
এ ব্যাপারে ব্রহ্মগাতি গ্রামের কুরমনির দেবাশিষ বিশ্বাস, বোয়ালিয়ার টিটব বিশ্বাস ও পাটরপাড়া গ্রামের ফজলু তালুকদার বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকেই দেখছি আমাদের অঞ্চলে ভোটে জেতা প্রার্থীদের গলায় টাকার মালা পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। ভোটাররা আগে ভাগেই টাকার মালা গেঁথে অপেক্ষা করেন তাঁদের বিজয়ী মেম্বার-চেয়ারম্যানের জন্য।
চিতলমারী সদর ইউনিয়নের জয়ী (ইউপি) সদস্য মো. মতিয়ার রহমান টুকু, মো. ইব্রাহীম মুন্সি, হিজলা ইউনিয়নের সদস্য মেহেদী হাসান সবুজ মুন্সি ও মো. অহিদ বিশ্বাস বলেন, ভোটারদের এ মালা, ভালবাসার মালা। জয়ের মালা। এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে দোয়া ও আশির্বাদ। অনেকের কষ্ট হলেও এ মালা গেঁথে রাখেন। এটা আমাদের এলাকায় প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এ মালার যথার্থ মূল্যায়ন করার চেষ্টা করব।
খুলনা গেজেট/ এস আই