খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

‘গুলাব’র পর নতুন নিম্নচাপের অভিমুখ বাংলাদেশ

গেজেট ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় ‘গোলাব’র পর নতুন নিম্নচাপের অভিমুখ বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। বুধবারের মধ্যে তা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড় ’গুলাব’-এ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর। গতিপথ অপরিবর্তিত থাকলে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) অপরাহ্ণে ভারতের উড়িষ্যার গোপালপুর, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের মাঝে কলিঙ্গপত্তনমের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে।

আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান,গভীর নিম্নচাপটি উড়িষ্যা হয়ে ভারতে প্রবেশ করবে। ফলে বাংলাদেশের ওপর বড় কোনো প্রভাব না পরার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উপকূলীয় এলাকায় এর প্রভাবে বৃষ্টি বাড়বে। অতি বৃষ্টিতে উপকূলভাগের নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয়বর্তী কিছু এলাকাসহ ঢাকাতেও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে যে ভ্যাপসা গরম পড়েছে, সেটিও কাটতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হলেও ভারী বর্ষণ বা একটানা বর্ষণ এখনো শুরু হয়নি। তবে আজ রোববার ও সোমবারের দিকে বৃষ্টিপাত বাড়বে। তখন গরমও কমে আসবে।

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস জানান, গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ভারতের উপকূলের দিকে যাচ্ছে। গুলাব হবে একটি স্বল্প শক্তির ঘূর্ণিঝড়, যার গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এটি মূলত ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হানবে। আর বাংলাদেশে এর প্রভাব কিছুটা পড়বে। চট্টগ্রাম,কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১(এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গুলাব’ চলে গেলেও পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে। এই নিম্নচাপের অভিমুখ হবে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। বুধবারের মধ্যে তা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে পারে।

আগামীকাল ২৭ সেপ্টেম্বর নাগাদ সাগরে এই সুস্পষ্ট লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি ২৯ সেপ্টেম্বর নাগাদ গভীর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এই নিম্নচাপের অভিমুখ হবে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। সুতরাং এই জোড়া ফলার কারণে এসপ্তাহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে আবহাওয়া দফতর গতকাল বিকালে তাদের বুলেটিনে জানায়,গভীর নিম্নচাপটি সর্বশেষ চট্টগ্রাম থেকে ৪৮০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৪১৫ কিলোমিটার এবং ভারতের উড়িষ্যা উপকূল থেকে ৫১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী তিন দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।এছাড়া খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

প্রসঙ্গত যে, ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ নামটি পাকিস্তানের দেয়া, যার ইংরেজি রোজ; বাংলায় অর্থ গোলাপ ফুল।বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে সর্বশেষ গত মে মাসে ‘ইয়াস’ ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হেনেছিল। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত বছর মে মাসে বাংলাদেশে যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, তার নাম ছিল ‘আম্ফান’। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। যেমন ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার আটটি দেশ। যেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান। এক সময় ঝড়গুলোকে নানা নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হতো। ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো।এ কারণে ২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়।

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে বলা হয়েছে, ভুবনেশ্বরের আবহাওয়া কেন্দ্রের তরফেও সতর্কতা জারি করে বলা হয়েছে,আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণাবর্তটি উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোতে থাকবে এবং সেখান থেকে গতিপথ বদল করে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের পথ ধরবে। আজ রবিবার বিকেলের মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনম ও ওড়িশার গোপালপুরের মাঝখান দিয়ে কলিঙ্গপত্তনম দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করবে।এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আগামী পাঁচদিন ধরে ওড়িশায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গোপসাগর উপকূলেও নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় বৃষ্টিপাত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!