প্রেমিকার ভাইয়ের অব্যাহত হুমকির কারণে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ সেবনে রিফাত বিন বাহার (২০) এর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা আব্দুল হাই বাহার। খুলনা মহানগরীর বসুপাড়াস্থ ইসলামাবাদ স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল রিফাত। এ ব্যাপারে রিফাতের পিতা খালিশপুর থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করবেন বলে খুলনা গেজেটকে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিফাতের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারো মাইলের সুভাষিনী এলাকার একটি মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল রিফাতের। বিষয়টি জানতে পেরে পরিবারের সদস্যরা মেয়েটির কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন মানুষের ফোন দিয়ে রিফাতকে পারিবারিক অত্যাচারের কথা জানাতে থাকে মেয়েটি। গত বৃহস্পতিবার মেয়ের বড় ভাই মোবাইলে রিফাতকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি প্রদান করে। এটা পরিবারের লোকজনকে জানায় সে। একপর্যায়ে রিফাত এ অপমান সহ্য করতে না পেরে ওই দিন রাতে স্থানীয় একটি ফার্মেসী থেকে ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে। রাতে ঔষধগুলো সেবন করে সে। শুক্রবার সকালে রিফাতকে ঘুম থেকে তুলতে গেলে বড় ভাই রায়হান তার মাকে ডাকতে নিষেধ করে। ঘুম থেকে উঠতে দেরি করায় বিকেলে ডাকতে গিয়ে দেখে রিফাতে মুখ নীল হয়ে গেছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে মৃত রিফাতের পিতা আব্দুল হাই বাহার খুলনা গেজেটকে জানান, আঠারো মাইল সুভাষিনী এলাকার এক কয়লা ব্যবসায়ীর মেয়ের সাথে তার ছেলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। গত বৃহস্পতিবার নগরীর আহসান আহমেদ রোড এলাকায় একজন ডাক্তারকে দেখাতে আসে মেয়েটির পরিবার। মেয়েটির পরিবারের সাথে তার কথা হয়। এর মধ্যে মেয়েটির বড় ভাই তাদের বিভিন্ন ধরণের হুমকি ও গালমন্দ করে। মেয়েটির ভাই সেখানে বলে, ‘আমি যা বলব সে অনুযায়ী সব কিছু হবে।’ সন্তান মারা গেছে, আমি এর বিচার চাই। তিনি থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন জানান, রিফাতের আত্মহত্যার ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। আত্মহত্যার কারণ সম্বলিত কোন প্রমাণ এখনো পর্যন্ত তারা পাননি। হুমকির সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এরপর বিকেলে রিফাতের লাশ পারিবারিক ব্যবস্থাপনায় দাফন করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএ