বৃহস্পতিবার । ২০শে নভেম্বর, ২০২৫ । ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
কয়রায় ভোট বা‌তি‌লের দা‌বি‌তে সংবাদ স‌ম্মেলন

নির্বাচনে ভোট গ্রহণ নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নানা অভিযোগ

কয়রা প্রতি‌নি‌ধি

খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলাকালে ভয়-ভীতি দেখিয়ে এজেন্ট ও ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাঁধা দেয়া, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, প্রকাশ্যে ভোট প্রয়োগে বাধ্য করা, অভিযোগের পরেও প্রশাসনের নিরবতা, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট কেন্দ্রে প্রবেশে বাঁধা, প্রার্থীর উপর হামলা, এমনকি কক্ষে আবদ্ধ করে রাখাসহ কেন্দ্র দখলের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া নির্বাচন পরবর্তী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাছাড়া নির্বাচন পরবর্তী নৌকা প্রতিকের কর্মী-সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষের লোকদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

ঘোড়া প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্ব‌ন্দ্বিতাকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএম রফিকুল ইসলাম মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দিন ভোর থেকে নয়নী, সাতহালিয়া, গিলাবাড়ি ও মহেশ্বরীপুরসহ প্রায় সবগুলো ভোট কেন্দ্রে নিযুক্ত এজেন্টদের নৌকা প্রতিকের কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে কেন্দ্রে আসতে নিষেধ করে। ভয় পেয়ে কিছু এজেন্ট গাঁ ঢাকা দেয়। আর অনেককে কেন্দ্রে আসার পথে বাঁধা দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেয়।

এছাড়া কেন্দ্রে অবস্থান করা এজেন্টদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রকাশ্যে ভোট মেরে নিলেও মুখ খুলতে নিষেধ করে। তাছাড়া কিছু কেন্দ্রে ভোটারদেরও কেন্দ্রে আসতে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। প্রায়সব ভোটারদের চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়। বি‌ভিন্নস্থা‌নে সংঘ‌র্ষে তাঁর প‌ক্ষের দেবা‌শীষ, রাঙ্গা ও কাজল আহত হয়।

তিনি আরও জানান, নয়ানী কেন্দ্রে তার কোন এজেন্ট ঢুকতে দেয়া হয়নি। সাতহালিয়া কেন্দ্রে কিছু এজেন্ট থাকলেও প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারায় বাঁধা দিতে পারিনি। এসব অভিযোগ প্রশাসনকে একাধিকবার জানানোর পরেও অজানা কারণে প্রশাসন নিরব ছিল। মেলেনি তাদের কোন সহযোগীতা। তিনি সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে সাতহালিয়া কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে নৌকার কর্মীরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রিজাইডিং অফিসার মনিরুজ্জামান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল ইসলামের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েও কোন উপকারে আসেনি। পরে বাইরে দিয়ে র‌্যাবের একটি গাড়ি যেতে দেখে হাতের ইশারা দিয়ে থামিয়ে অভিযোগ জানায়। অভিযোগ শোনার পরে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তারা চলে গেলে নৌকার কর্মী-সমর্থকরা সাহস পেয়ে তার উপর আক্রমণ করে এবং তা‌কে ধরে নিয়ে একটি কক্ষে আবদ্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে মিডিয়া কর্মীর সাথে মোবাইলে জানানোর চেষ্টা করি এবং মি‌ডিয়ার কর্মী আস‌লে উপ‌স্থি‌তি টের পে‌য়ে আমাকে কক্ষ থেকে বের করে কেন্দ্র ত্যাগ করতে বাধ্য করে। এছাড়া সাড়ে ১২টার পরে ওই ৪টি কেন্দ্র দখল করে নৌকার লোকজন।

তি‌নি আরও ব‌লেন, মঙ্গলবার ভোর থে‌কে ভাগবা ও সাতহা‌লিয়ায় দফায় দফায় আমার কর্মী-সমর্থক‌দের উপর হামলা চালায়। বা‌ড়ি ঘ‌রে ইট পাট‌কেল নি‌ক্ষেপ ক‌রে নৌকার কর্মীরা। ভাগবা সরকারী প্রাথ‌মিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিএম অদুদ হো‌সে‌নের নেতৃ‌ত্বে তার ভাই আঃ রাজ্জাক, ম‌নিরুজ্জামান ম‌নি, হায়দারসহ বেশ ক‌য়েকজন মি‌লে জিয়াদ আলী গাজী, মিজানুর রহমান, ‌হেলালসহ সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা ম‌র্জিনার উপর হামলা ক‌রে। মিজানুর রহমা‌নের বা‌ড়ি ঘ‌রে ইটপাট‌কেল নি‌ক্ষেপসহ গেট ভাংচুর ক‌রে। এ‌তে তিনজন আহত হয়। এছাড়া প্রতি‌টি এলাকার কর্মী‌দের হুম‌কি-ধাম‌কি অব্যাহত র‌য়ে‌ছে। সং‌শ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপ‌ক্ষের আশু হস্ত‌ক্ষেপ কামনা এবং ভোট বা‌তিল পূর্বক পুনরায় ভোট গ্রহ‌ণের দা‌বি জানান তি‌নি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন