খুলনা মহানগরীর ইস্টার্ণগেট মশিয়ালী ট্রিপল মার্ডার মামলার এজাহারভুক্ত আসামী মোঃ জুয়েল শেখ (৪০) ও তার ভাই মোঃ মুরাদ শেখ (৩২) কে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট তরিকুল ইসলাম রিমান্ডের আদেশ দেন। আদালতে হাজির করে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে ১০দিনের রিমান্ডে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আসামী সহোদর মশিয়ালী এলাকার মোঃ মোকছেদ শেখের ছেলে।
এদিকে, হত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্ত শেখ জাকারিয়া ও মিল্টনকে গ্রেফতার এবং ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম শেষ হচ্ছে আগামীকাল (২০ আগস্ট)। গত ১৩ আগস্ট দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এক সপ্তাহের মধ্যে জাকারিয়া-মিল্টনদের গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয় মশিয়ালীবাসী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ এনামুল হক জানান, এমামলার এজাহারভুক্ত ২২জন আসামীর মধ্যে এ পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হল- মশিয়ালী গ্রামের মৃত হাসান আলী শেখের ছেলে মোঃ জাফরীন শেখ (৩২), মোঃ মোকছেদ শেখের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫) ও মোঃ আলমগীর শেখ (৩৮), মোঃ কুরবান শেখের ছেলে মোঃ আরমান শেখ (২০), মৃত আক্তার আকুঞ্জির ছেলে মোঃ রহিম আকুঞ্জি (২২), মোঃ ফারুকের ছেলে মোঃ রবিন (২০), মোঃ বাবুল শেখের ছেলে মোঃ মিঠু শেখ (৩৩) ও সর্বশেষ মোঃ মোকছেদ শেখের ছেলে মোঃ জুয়েল শেখ (৪০) ও তার ভাই মোঃ মুরাদ শেখ (৩২)। এদের মধ্যে জাফরীন শেখ, আরমান শেখ ও আলমগীর শেখ আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে। গ্রেফতার নয়জনকেই রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই রাতে মোঃ জাকারিয়া শেখ মশিয়ালী সিএন্ডবি’র ঘরের একটি কক্ষে তিন রাউন্ড বন্দুকের গুলি ও দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি নিজে রেখে ট্রিপল মার্ডার মামলার বাদীর চাচাতো ভাই মুজিবর শেখকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাদীসহ পাড়ার আরো কিছু লোক মুজিবরকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার কারণ জানতে শেখ জাকারিয়া, মিল্টন ও জাফরিন সহোদরদের বাড়ির সামনে যায়। এসময়ে তাদের সাথে বাক-বিতন্ডার একপর্যায়ে মিল্টন শেখ গুলি করলে নজরুল শেখ মারা যায়। জাফরীন শেখ গুলি করলে গোলাম রসুল নিহত হন। শেখ জাকারিয়ার গুলিতে জখম হন বাদীর ছেলে সাইফুল ইসলাম। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সাইফুল। তাদের অন্যান্য সহযোগীদের গুলিবর্ষণে বাদীসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় আফসার উদ্দিন, তার ছেলে রবি, শামীম, খলিল, রানা ও সুজন শেখসহ আরও অনেকে। এঘটনায় নিহত সাইফুলের পিতা মোঃ শাহিদুল শেখ বাদী হয়ে মশিয়ালী গ্রামের মৃত হাসান আলী শেখের চার ছেলেসহ ২২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/১৬জনকে আসামী করে খানজাহান আলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (যার নং-১২, ১৮-৭-২০২০ইং)।
খুলনা গেজেট/এআইএন