শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে। এ খবরে সারাদেশে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমহলসহ শিক্ষা বিভাগ উচ্ছ্বসিত। অনেক এলাকায় এ নিয়ে সাজসাজ রব চলছে। দীর্ঘ ১৮ মাস পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরবেন, ফিরবেন শ্রেণীকক্ষে। তাই নির্ধারিত দিনে পাঠদান শুরু হলে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে।
চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৪ টি কলেজ, ৩১ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭ টি আলিয়া মাদ্রাসা ও ১১১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। মোট ১৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৩ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১২ হাজার ৩৭ জন ছাত্র ও ১১ হাজার ৯৩২ জন ছাত্রী। ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর সারাদেশে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে ১৮ মাস সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলার প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর ক্লাস বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গত ৩ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন শেষে ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে বলে জানান। এরপর থেকেই সারাদেশে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমহলসহ শিক্ষা বিভাগ উচ্ছ্বসিত। অনেক এলাকায় এ নিয়ে সাজসাজ রব চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য মাঠের পাশের বাগান পরিস্কার, ঝাড় দেওয়া ও ক্লাসরুমে ধোয়া মোছা চলছে। শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে করছেন জুমমিটিং, সভা ও আলোচনা। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত স্কুল ড্রেস এবং পোশাক তৈরিতে।
এ ব্যাপারে চিতলমারী সরকারি এস এম মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সুলতানা জ্যোতি, সৌরভ কর্মকার, অভি শেখ ও আরবি আক্তার এবং সুরশাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিরা সুলতানা ছোঁয়া, মোহনা আক্তার ও তারিফ শেখ জানায়, দীর্ঘদিন ঘরে বসে থাকতে থাকতে তাদের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। স্কুল খোলার খবরে তারা খুব আনন্দিত।
অভিভাবক ওসিকুল ফরাজী ও বাবলু মন্ডলসহ অনেকে জানান, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধের পথে। স্কুল-কলেজ খুললে আমাদের সন্তানরা আবার ক্লাসে ফিরে যাবে। তাই আমরা তাদের ১২ তারিখে স্কুলে পাঠানোর জন্য সার্বিকভাবে তৈরি করছি।
স্কুল শিক্ষক বিপদ ভঞ্জন ও মোঃ সাফায়েত হোসেন বলেন, যদিও আমরা অনলাইনে ক্লাস করিয়েছি। মোবাইল ফোনে শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিয়েছি। কিন্তু শ্রেণী পাঠদান ছাড়া পরিপূর্ণভাবে পাঠদান সম্ভব নয়। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার খবরে আমরা ভীষণ খুশি।
চিতলমারী শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও স্কুল শিক্ষক শোয়েল মোল্লা বলেন, আমি যেমন একজন শিক্ষক, তেমনি একজন বাবা। স্কুল খোলার খবরে আমিও আনন্দিত। অনেক অভিভাবক আমার সাথে এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
চিতলমারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরাও অবগত আছি। আমি ইতোমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে বৈঠক করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখতে বলেছি।
চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, স্কুল খোলার ব্যাপার নিয়ে আমরা জুম মিটিং করেছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করব।
খুলনা গেজেট/এনএম