শ্রীলঙ্কায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য মজুত ঠেকাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। চলমান খাদ্য সংকট নিরসনে দেশটির পার্লামেন্ট এই জরুরি অবস্থা জারির পক্ষে সায় দেয়।
তবে বিরোধীদলীয় পার্লামেন্ট মেম্বাররা সোমবার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, দেশে জরুরি অবস্থা জারির কোনো দরকার নেই। কারণ খাদ্য সরবরাহে যেসব আইন আছে সেগুলো কার্যকর করলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। জরুরি অবস্থা জারি করে পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।
সরকার বলছে, খাদ্য সংকট মোকাবিলায় স্বাভাবিক আইন প্রয়োগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘ হচ্ছে।
জরুরি অবস্থা চলাকালে পরোয়ানা ছাড়াই যে কাউকে গ্রেপ্তার করা, সম্পত্তি জব্দ ও বাজেয়াপ্ত করা, যে কোনো স্থানে বিনা বাধায় অভিযান ও তল্লাশি পরিচালনা ও বিদ্যমান আইনে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ রয়েছে। এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও সুযোগ নেই।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে গত ৩০ আগস্ট দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। দেশটির ২২৫ সাংসদের মধ্যে সরকারদলীয় রয়েছেন ১৫০ জনেরও বেশি। জরুরি অবস্থা জারির পক্ষে ১৩২ জন ভোট দিয়েছেন, বিপক্ষে দিয়েছেন ৫১ জন।
শ্রীলঙ্কায় মার্কসবাদী বিদ্রোহ ও কয়েক দশক ধরে চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গত ৫০ বছরে বেশিরভাগ সময় জরুরি অবস্থার মধ্যে ছিল। কর্তৃপক্ষদের বিরুদ্ধে প্রায় সময়ই বিরোধীদের দমনে জরুরি অবস্থার সুযোগ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতি দেখা যায়। বাজারে চিনি, দুধ, পাউডার ও রান্নার গ্যাসের মতো উপকরণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সরকারের দাবি, মজুতকারীরা এই পরিস্থিতি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটিয়েছে।
শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের মুখেও পড়েছে। পর্যটন ও রপ্তানি শিল্পের জন্য ব্যাপক ঋণ পরিশোধের জন্য এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।