বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে দুই দেশ মিলিয়ে ২৪ সদস্যের বাহিনী গড়ে তুলেছেন যশোরের শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকুল হোসেন।
ভারত-প্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের মধ্যস্থতায় পশ্চিমবঙ্গের মহাজনদের কাছ থেকে কিনছেন অস্ত্র। সেই অস্ত্র সীমান্ত এলাকার আবাদি জমিতে পুতে রাখে মহাজনের লোকেরা। এনক্রিপ্টেড অ্যাপে খবর পেয়ে মাটি খুঁড়ে অস্ত্র বুঝে নেয় আকুল বাহিনী।
দু’হাজার চৌদ্দতে অবৈধ অস্ত্রের কারবারে নামেন আকুল। পরের বছরই যশোরের শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ। ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে গড়ে তোলেন চব্বিশ সদস্যের বাহিনী।
সম্প্রতি যশোর থেকে অস্ত্র বিক্রি করতে ঢাকায় এসে চার সহযোগীসহ ধরা পড়েন আকুল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, ভারত-প্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের তিন মহাজনের কাছ থেকে অস্ত্র কেনেন আকুল। মানি এক্সচেঞ্জে মেটান পাওনা। তারপর মহাজনের লোকজন সীমান্ত এলাকার আবাদি জমিতে পুতে রাখে অস্ত্র। হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেয়ে মাটি খুড়ে অস্ত্র বের করে আকুলের লোকজন। নজরদারি এড়াতে পানির জারের মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয় অস্ত্রগুলো।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (গুলশান) উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, সীমান্তে দুই পক্ষীয় যৌথ টহল যখন বন্ধ থাকে বা সাময়িক বিরতি থাকে তখন ঐ পাশের শ্রমিক এই পাশের শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করার নামে এসব কাজ করে থাকে। অস্ত্রের দাম তারা মানি এক্সচেঞ্জ বা বিকাশের মাধ্যমে প্রেরণ করে।
সাত বছরে দুইশোর বেশি অস্ত্র বিক্রি করে কোটি টাকার বেশি লাভ করেছেন আকুল। এবার তার ক্রেতা ভূমিদস্যু, ছিনতাইকারী, মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা তৈরি করে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (গুলশান) উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, কখন কার কাছে সে অস্ত্র বিক্রি করছে তার সংক্ষিপ্ত তালিকা আমরা বানাচ্ছি। সেই তালিকা অনুসন্ধান করেই আমরা খুঁজে বের করবো আর কে কে এর সঙ্গে জড়িত। এসব অস্ত্র তারা কি কাজে ব্যবহার করছে অথবা তারা আবার অন্য কাউকে বিক্রি করে দিচ্ছে কি না।
দু’বছর আগে যশোরে আকুলের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করে পুলিশ। মামলা হলেও রহস্যজনকভাবে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয় ছাত্রলীগ নেতার নাম। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, স্বর্ণ ছিনতাইসহ আটটি মামলার সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
খুলনা গেজেট/ টি আই