১৮ রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে নিচ্ছে নিউ জিল্যান্ড। উইল ইয়াংকে নিয়ে দলকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তারা ২৮ রান করে ২ উইকেট হারিয়ে। ক্রিজ আঁকড়ে ধরে লক্ষ্যপানে ছুটছেন তারা। ৮.৫ ওভারে দলীয় স্কোর পঞ্চাশে পৌঁছায়।
টম ল্যাথামের সঙ্গে উইল ইয়াংয়ের জুটি টানছিল নিউজিল্যান্ডকে। ইয়াংকে ফিরিয়ে ৪৩ রানের জুটি ভাঙলেন সাকিব। অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েছেন ইয়াং, ২৮ বলে ২২ রান করে। নাসুমের দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ডি গ্র্যান্ডহোম (৮ রান)। নাসুমের ফুল লেংথের বলটা মারার মতো জায়গাতেই ছিল। ডি গ্র্যান্ডহোম শট খেলেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেটি সোজা চলে গেল ডিপ স্কয়ার লেগে মুশফিকুর রহিমের হাতে।
প্রথম বলেই ছক্কা খেলেন সাকিব। রচিন রবীন্দ্র মাথার উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান। পরের বলও মারতে গিয়েছিলেন রবীন্দ্র। কিন্তু সাকিবের বল ব্যাট প্যাডে লেগে স্টাম্পে লেগেছে তাঁর। ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। পরের ওভারে আসেন মেহেদী। প্রথম বলেনই উইকেট তুলে নেন তিনি। মেহেদীর বলে এগিয়ে এসে স্টাম্পড হলেন টম ব্লান্ডেল। ৬ রান করে ফিরেছেন ব্লান্ডেল।
বাংলাদেশের দেয়া ১৪২ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র ও টম ব্লান্ডেল। নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই তাদের জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। রবীন্দ্রকে ব্যক্তিগত ১০ রানে বোল্ড করে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার।
এরপর আরেক ওপেনার ব্লান্ডেল ব্যক্তিগত ৬ রানে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন শেখ মেহেদীর বলে।
টস ভাগ্যে জয়ী হয়ে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দুই ওপেনার লিটন দাস এবং নাইম শেখ ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের ব্যাটে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ দল। প্রথম দুই ওভারে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৬ রান নিলেও কলিন ডি গ্রান্ডহোমের হাতে জীবন পান লিটন।
এরপর পাওয়ার প্লে’তে পেছনে ফিরে তাকাননি এই ওপেনার। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের দেখে শুনে খেলে ৬ ওভারে এই জুটি স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৩৬ রান। টম ল্যাথাম বোলিংয়ে নিয়মিত পরিবর্তন এনেও বিপদে ফেলতে পারেননি। রান রেট ৬ এর কাছাকাছি রেখে ৯ ওভারে দলীয় ৫০ রানে পৌছায় বাংলাদেশ।
এ নিয়ে ৯ ইনিংস পর ওপেনিং জুটিতে ৫০ রান যোগ করে বাংলাদেশ। সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ওপেনাররা ১০২ রানের জুটি গড়েছিলেন।
প্রথম ৯ ওভারে প্রতিপক্ষের বোলারদের বড় কোন সুযোগ না দিলেও ১০ম ওভারের প্রথম বলে রচিন রবীন্দ্রকে ছক্কা হাঁকালেও তৃতীয় বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হন লিটন। ২৯ বলে ৩৩ রান করেন এই ওপেনার। এরপরের বলেই তিনে নামা মুশফিকুর রহিম প্রথম বলেই ফেরেন স্টাম্পিং হয়ে।
টানা দুই উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করতে ক্রিজে এসে দ্রুত ৭ বলে ১২ রান করলেও কোল ম্যাককনকিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন সাকিব। এরপর ক্রিজে নেমে নাঈমকে ভালো সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ।
পরের ৪ ওভারে দুজন মিলে যোগ করেন ৩১ রান, সঙ্গে দলকে এনে দেন ১০০ রানের পুঁজি। ১৫ ওভারে স্বাগতিকদের রান তখন ৩ উইকেটে ১০৩। তবে ১৬তম ওভারের ৫ম বলে রবিন্দ্রকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৩৯ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন নাইম।
পরের ওভারে এক রানে ফেরেন আফিফ। ১৭ ওভারের সময় ক্রিজে আসেন নুরুল হাসান। ওভার শেষে ৫ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ১১০। সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ এবং নুরুল। ১৯তম ওভারে এই জুটি যোগ করে ১৩ রান।
২০তম ওভারে এই জুটি আরও যোগ করে ১১ রান। তাতেই ১৪০ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শেষ বলে ক্যাচ আউট হন নুরুল হাসান। ৮ বলে ১৩ রান করেন এই উইকেটরক্ষক, মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ৩২ বলে ৩৭ রানে। রাচীন নেন ৩ উইকেট।
বাংলাদেশ একাদশ : লিটন দাস, নাইম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নুরুল হাসান সোহান, আফিফ হোসেন, শেখ মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: রাচিন রবীন্দ্র, টম ব্লান্ডেল, উইল ইয়াং, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, টম লাথাম (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), হেনরি নিকোলস, কোল ম্যাককনি, ডগ ব্রেসওয়েল, এজাজ প্যাটেল, হামিশ বেনেট এবং বেন সিয়ার্স।