‘বিদ্রোহীদের’ হাতে থাকা পাঞ্জশিরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে উপত্যকার আরো কাছে চলে এসেছে তালেবান বাহিনী। তালেবান জানিয়েছে, তারা যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সুরাহা চায়। তবে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ ও আহমদ মাসুদ জানিয়েছেন, তারা আলোচনা করতে রাজি, তবে সেইসাথে প্রতিরোধও চালিয়ে যাবেন, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তারা পাঞ্জশিরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়বেন না।
তালেবান বাহিনী বলেছে, তারা পাঞ্জশিরে প্রবেশের রাস্তাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। তারা খুবই সতর্কতামূলক অবস্থানে রয়েছেন।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়, তালেবান বাহিনী পাঞ্জশিরের কাছে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে।
দুর্ধর্ষ মুজাহিদিন কমান্ডার আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদ রয়টার্সকে বলেন, আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তবে আলোচনা ব্যর্থ হলে তিনি যুদ্ধ করতে প্রস্তুত।
সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ বলেন, তাদের বাহিনী সালাঙ হাইওয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু তালেবান বলেছে, হাইওয়েটি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সালেহ টুইটে জানান, গণপ্রতিরোধের ফলে তালেবানের অবরোধ সফল হচ্ছে না।
তিনি বলেন, পাঞ্জশিরে আমি আমার ঘাঁটিতে আছি। পাঞ্জশিরের জনগণ ঐক্যবদ্ধ। তারা লড়াই করতে চায়।
আর আহমদ মাসুদ বলেন, আফগান জনগণের খুবই সামান্য অংশ আমরা। পাঞ্জশির আয়তনের দিক থেকেও ছোট। তবে আমরা এখন পুরো দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি।
নিজেকে সিংহশাবক (তার বাবা আহমদ শাহ মাসুদ নিজেকে বলতেন পাঞ্জশিরের সিংহ) দাবি করে ৩২ বছর বয়স্ক স্যান্ডহার্স্ট প্রশিক্ষিত আহমদ মাসুদ বলেন, তার বাহিনী পরাজয়ের চেয়ে শহিদি মর্যাদা লাভ করতে বেশি ভালোবাসে।
এদিকে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, পাঞ্জশিরের জনগণ যুদ্ধ চায় না। অল্প কিছু লোক যুদ্ধ করতে চাচ্ছে। এমনকি আলেম ও প্রবীণ ব্যক্তিরা নিয়মিতভাবে আমাদের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে যে তারা যুদ্ধ চায় না। এর অর্থ হলো, জনগণ যুদ্ধ সমর্থন করছে না। অল্প কিছু লোক ভুল করছে। তাদেরকে প্রতিরোধ করা হবে।
তালেবানের হাতে এখন আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের ৩৩টি। তালেবান বাহিনী সোমবার পাঞ্জশিরের পাশের প্রদেশের তিনটি জেলা আবার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। এর ফলে পাঞ্জশিরের ওপর আরো চাপ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরুল্লাহ সালেহ ও আহমদ মাসুদ মূলত কিছু সুবিধা আদায় করতে চাচ্ছেন। তারা সরকারব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণের দাবিও জানাচ্ছে। সূত্র : ডেইলি মেইল, তোলো নিউজ, বিবিসি
খুলনা গেজেট/কেএম