আফগানিস্তান নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, বিশ্বের উচিত তালেবানকে চাপ না দিয়ে সমর্থন করা।
“যে বাহিনী ধ্বংসের জন্য চেষ্টা চালায় এবং যারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাম্রাজ্য তৈরির মতাদর্শ অনুসরণ করে, তারা কিছু সময়ের জন্য আধিপত্য বিস্তার করতে পারে, কিন্তু তাদের অস্তিত্ব কখনো স্থায়ী হয় না। কারণ তারা মানবতাকে চিরতরে দমন করতে পারে না”। সরাসরি তালেবানদের নাম না করে তাদের নিশানা বানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দা ইকোনমিক টাইমস -এর প্রতিবেদন অনুসারে , আজ গুজরাটের বিখ্যাত সোমনাথ মন্দিরের কয়েকটি প্রকল্পের ভার্চুয়াল উদ্বোধনের সময় এই মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগেই রটে গিয়েছিল আফগানিস্তানের কান্দাহার এবং হেরাটে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে হানা দিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা । তবে পরে জানা যায় যে, সবটাই রটনা। ভারতের দূতাবাস জানিয়েছে, এই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
মোদি এদিন বলেন, “সোমনাথ মন্দির বহুবার ধ্বংস করা হয়েছে, মূর্তির অপমান করা হয়েছে এবং তার অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটা ধ্বংসাত্মক আক্রমণের পর ফের তা পূর্ণ মহিমায় ফিরে এসেছে, যা আমাদের আত্মবিশ্বাস জোগায়”।
আফগানিস্তান ইস্যু নিয়ে এখনও পুরোপুরি অবস্থান ঠিক করে উঠতে পারেনি ভারত সরকার। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রীগোষ্ঠীকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় ভারতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তালেবান নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই তালেবান-প্রশ্নে ভারতের অবস্থান নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
মনে করা হচ্ছে, তালেবান সম্পর্কে এবার আর আগের মতো কড়া অবস্থান নেবে না ভারত। ওই বৈঠকেই নাকি প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত ভারতের প্রথম লক্ষ্য এদেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা। বর্তমানে আফগানিস্তানের ভারতীয় দূতাবাস খালি করাচ্ছে ভারত সহ বেশিরভাগ দেশ। ইতিমধ্যেই দেড়শো মানুষকে এয়ারলিফট করে দেশে ফিরিয়েছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, চাইলে আফগানরাও ভারতে ঠাঁই পাবেন।
অন্যদিকে আরো চাপ দেওয়ার বদলে বিশ্বের উচিত আফগানিস্তানে তালেবানকে পরামর্শ দেয়া, সমর্থন করা। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে ফোনালাপে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এমন কথা বলেছেন বলে ইউরো নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি থেকে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ফোনালাপে ওয়াং বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত তাকে (তালেবান) আরো চাপ প্রয়োগ না করে ইতিবাচক দিক নির্দেশনা দেওয়া। এতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আফগানিস্তানকে ভূ-রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার না করা। দেশটির স্বাধীনতা এবং জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান জানানো উচিত।
চীন ব্রিটেনের সাথে ভ্যাকসিন, চিকিৎসা এবং ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল শনাক্তকরণে যোগাযোগ জোরদার করতে ইচ্ছুক বলেও জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।