আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদে তালেবানবিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত ও আরও এক ডজনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তালেবান যোদ্ধাদের ছোড়া গুলিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় তালেবান যোদ্ধারা গুলিবর্ষণ করেছে। এতে তিনজন নিহত ও আরও এক ডজনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, রাজধানী কাবুল থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরের জালালাবাদের কেন্দ্রে স্থানীয় বাসিন্দারা আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকা টাঙানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তারা তালেবানের পতাকা নয়, আফগানিস্তানের পতাকাই সরকারি ভবনে টাঙানোর দাবি জানান। একই দাবিতে সেখানে বিক্ষোভ শুরু করলে তালেবান যোদ্ধারা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এতে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটে।
মে মাস থেকে আফগানিস্তান দখলের অভিযান শুরুর পর মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে দেশের ৩৪ টি প্রদেশের ২৮টির দখল নেওয়ার পর গত রোববার রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করে তালেবান। ওই দিনই দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে পলায়ন করেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।
এদিকে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহরে সাদা হিজাব ও কালো বোরকা পরে স্কুলে ফিরেছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা। বুধবার ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে মেয়েদের স্কুলে ফেরার এই খবর দেওয়া হয়েছে।
এএফপি বলছে, হেরাতের স্কুলের দরজা খুলে যাওয়ার পর ছাত্রীরা করিডোরে ও স্কুল চত্বরে আড্ডায় মেতে ওঠে। গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশটিতে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, ছাত্রীদের দেখে মনে হয়েছে তারা সে বিষয়ে কিছুই জানে না।
তালেবানের শাসনামলে মেয়েদের স্কুল শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, আপাতত সেই শঙ্কার মেঘ কেটে গেছে। সরকারি বাহিনী এবং স্থানীয় মিলিশিয়াদের পতনের পর হেরাতের দখল তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর চলতি সপ্তাহে এএফপির একজন আলোকচিত্রী ছাত্রীদের স্কুলে ফেরার ছবি ক্যামেরায় ধারণ করেন।
রোকিয়া নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা অন্যান্য দেশের মতো অগ্রগতি চাই। আর তালেবান নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে আমরা আশা করছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, দেশে শান্তি চাই।’
ইরান সীমান্তের কাছের শহর হেরাতের প্রাচীন সিল্ক রোড এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানের অন্যান্য অধিক রক্ষণশীল অঞ্চলের তুলনায় ব্যতিক্রম। এই এলাকার নারী ও তরুণীরা রাস্তায় অবাধে হাঁটেন। কবিতা ও শিল্পকলার জন্য বিখ্যাত এই শহরের স্কুল-কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রচুর উপস্থিতি দেখা যায়। তবে এই শহরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা এখনো অনিশ্চিত।
খুলনা গেজেট/এএ